বিচার অবৈধ, আমিই প্রেসিডেন্ট: আদালতে মুরসি
দিরিপোর্ট২৪ ডেস্ক : মিসরের আদালতে সোমবার বিচারের মুখোমুখি হওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি নিজেকে এখনো দেশটির বৈধ প্রেসিডেন্ট ও এ বিচারকাজ অবৈধ বলে দাবি করেছেন। প্রথমদিনের মতো শুরু হওয়া এ বিচারকাজ আগামী বছরের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করেছে আদালত। খবর রয়টার্স ও বিবিসির।
আদালতে দাঁড়িয়ে মুরসি বলেন, ‘আমি ড. মোহাম্মদ মুরসি এ প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট। আমিই মিসরের বৈধ প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্সিয়াল ব্যাপারে বিচার পরিচালনা করার কোনো অধিকার আপনাদের নেই।’
বিচার কাজ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিচারকদ্বয় আদালত মুলতুবি বলে ঘোষণা করেন।
বিচার চলাকালীন আদালতের বাইরে প্রচুর লোকের সমাগম হয়। মুরসি সমর্থকরা এ সময় এ বিচারকে ‘অবৈধ’ বলে স্লোগান দেয়। ‘জনগণের ইচ্ছাকে ধর্ষণ করা হয়েছে’ বলেও স্লোগান দেয় তারা।
আটকের পর প্রথমবারের মতো মুরসিকে বিচারের সম্মুখীন করা হলো। মুরসির সঙ্গে একই মামলায় আরো ১৪ ব্রাদারহুড নেতারও বিচার চলছে।
২০১১ সালে মোবারক সরকারের শেষ দিনগুলোতে জেল ভেঙ্গে বেরিয়ে আসা ও সহিংসতার অপরাধে মুরসিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া ২০১২ সালের ডিসেম্বরে মুরসি ক্ষমতায় থাকাকালীন একটি ডিক্রির বিরুদ্ধে জনতার প্রতিবাদে ১০ জনেরও বেশি নিহতের ঘটনায়ও মামলা করা হয়েছে। এ সকল মামলায় অভিযুক্ত প্রমাণিত হলে ৬২ বছর বয়সি এ নেতাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
দুই বছরের মধ্যে মিসরের দুই প্রেসিডেন্টকে বিচারের সম্মুখীন করা হলো। এর আগে একই স্থানে তিন দশক মিসর শাসন করা হোসনি মোবারকের বিচার শুরু করা হয়। আন্দোলনকারীদের হত্যা করার অপরাধে মোবারকের বিচার হয়।
এর আগে ২০১১ সালে জনগণের আন্দোলনের মুখে পতন ঘটে স্বৈরশাসক মোবারকের। এরপর দেশটিতে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়। এতে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থিত ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ মুরসি।
মুরসিকে বিচারের সম্মুখীন করার ব্যাপারে ব্রাদারহুডের এক মুখপাত্র বলেন, ‘বর্তমান সেনাশাসন অবৈধ। তাদের এ বিচারকাজও অবৈধ। মোহাম্মদ মুরসিকে না ছাড়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
এর আগে মুরসিকে হেলিকপ্টারে করে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে আনা হয়। আদালত প্রাঙ্গণ জুড়ে ছিল নিরাপত্তাবেষ্টনী। বিচারকাজ কোনো টেলিভিশনে প্রচার করতে দেওয়া হয় নি। এমনকি সাংবাদিকদের ফোন নিয়ে আদালতে ঢুকতে দেওয়া হয় নি।
স্বেচ্ছাপ্রণোদিত আইনজীবী মোহাম্মদ দামাতি বলেন, ‘বিচারের উদ্দেশ্য পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে, রাজনীতিতে মুসলিম ব্রাদারহুডসহ যেকোনো ধরনের ইসলামি কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, ১৩ মাস ক্ষমতায় থাকার পর গত ৩ জুলাই প্রেসিডেন্ট মুরসিকে হটিয়ে মিসরের শাসনক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর থেকে সেনাপ্রধান আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে মুরসি সমর্থকরা।
(দিরিপোর্ট২৪/এসকে/এমডি/নভেম্বর ০৪, ২০১৩)