মুহম্মদ আকবর, দ্য রিপোর্ট : অমর একুশে গ্রন্থমেলার অঙ্গন জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনার প্রতীক। বাংলা একাডেমির ভেতরে প্রবেশ করে প্রথমেই চোখে পড়ে মেলার মূলমঞ্চ এবং ডানপাশে শিশুতোষ স্টলের পেছনে ভাষাশহীদদের ছবিসহ বুদ্ধিজীবীদের রচিত জীবনবোধ সম্পন্ন নানা বাণী। একটু সামনে এগিয়ে নজরুল মঞ্চের দিক না গিয়ে তথ্য কেন্দ্র হয়ে বাম দিকে মোড় নিলেই বয়রা তলা। বরাবারের মতোই বয়রা তলায় সাজানো হয়েছে সারা দেশ থেকে আগত প্রতিশ্রুতিশীল লিটলম্যাগ নিয়ে। এটিকে প্রয়াত খ্যাতিমান কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন চত্বর হিসেবে ঘোষণা করেছে মেলা কমিটি। বয়রাতলাটি এবার সাজানো হয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে। মাঝখানে একটি ছোট্ট নদী, নদীতে পালতোলা নৌকা, নদীর অদূরে গ্রামীণ আবহে তৈরি খানিক দূরে দূরে ছোট্ট ছোট্ট ঘর। কোনো বাড়িতে তালগাছ, কোনো বাড়িতে ডালিম গাছ, আবার দুই বাড়ির সীমানায় বাঁশঝাড়, গাছে গাছে পাখি, রয়েছে কৃত্রিম উপায়ের তৈরি পাখির কলরবও। প্রতিটা বিষয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ রবীন্দ্র, নজরুল, সত্যেন্দ্রনাথ, সুফিয়া কামাল, ‍যতীন্দ্রমোহন বাগচীর নানা শিশুতোষ ছড়া লিটলম্যাগ চত্বরে আগত দর্শনার্থীদের কিছুক্ষণের জন্য হলেও শৈশবের স্মৃতিতে ফিরিয়ে নেয়। ‘কবিতায় বিচিত্র আমার বাংলা’ শীর্ষক দৃষ্টিনন্দন এ আয়োজনটির পরিকল্পনা করেছেন একাডেমির উপ-পরিচালক ডা. মোজাহিদুল ইসলাম।

লিটলম্যাগ প্রাঙ্গণে এ রকম আয়োজনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে লিটলম্যাগ প্রাঙ্গণের আহ্বায়ক কবি ও গবেষক আমিনুর রহমান সুলতান দ্য রিপোর্টকে জানান, ‘লিটলম্যাগ সাধারণ পাঠকের কাছে তেমনভাবে ধরা দিচ্ছে না, ফলে পুরো মেলায় প্রচুর লোকসমাগম হলেও জনশূণ্যতায় খাঁ খাঁ করে এ চত্বরটি। অন্তত এটিকে কেন্দ্র করে যেন লোকসমাগমে প্রাণবন্ত হয় এ প্রাঙ্গণ সেই তাড়নায় বয়রা তলায় সাজানো হয়েছে এমন মনোরম বাগান।’

একাডেমির এমন চিন্তার সাধুবাদ জানিয়েছে লিটলম্যাগের সাথে সংশ্লিষ্টরা। মঙ্গলবার নতুন সাজে সজ্জিত এ আয়োজনকে সানন্দে গ্রহণ করে ভিড় জমিয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শত শত দর্শক আর ক্রমশই নতুন আশা জাগছে লিটলম্যাগ সম্পাদকদের মনে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএ/কেএম/আরকে/ফেব্রুয়ারি ১১,২০১৪)