দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর কেটে গেছে এক যুগেরও বেশি সময়। মাঝখানের পাঁচ বছর ছিলেন টেলিভিশনের পর্দায় সংসদের দর্শক। ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে ফের সংসদে আসিন হলেও তখন ছিলেন স্রেফ একজন প্রশ্নকর্তা। ১৩ বছর আগে ‘উত্তরদানের’ যে সুযোগ তিনি হারিয়েছিলেন তা ফিরে পেয়েছেন মঙ্গলবার। গত নভেম্বরে তোফায়েল আহমেদ নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী হলে তখনও তার ভাগ্যে উত্তরদানের সুযোগ ছিল না।

উত্তর দিতে গিয়ে দীর্ঘ এ পথ পরিক্রমার স্মৃতিচারণ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুল্লাহর প্রশ্নের জবাব দিতে উত্তরদাতা হিসেবে সংসদে আবির্ভূত হন বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক।

উত্তর দিতে গিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পেতে দেশটির পক্ষ থেকে পাওয়া ১৬টি শর্তের মধ্যে ১৩টি ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাকি তিনটি এপ্রিলের মধ্যে পূরণ হবে। এরপর জিএসপি সুবিধা পেতে আর বাধা থাকবে না।’

মো. আবদুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ জানান, জিএসপি সুবিধা পেতে যুক্তরাষ্ট্রের যে তিনটি শর্ত বাকি রয়েছে তা হল : কারখানায় পরিদর্শক নিয়োগ। এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (ইপিজেড) এলাকায় শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার সুবিধা প্রদান। যে সব কারখানার বিরুদ্ধে শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

মন্ত্রী বলেন, ‘এ সব শর্ত পূরণ খুব বেশি কঠিন নয়। কেবল ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের ক্ষেত্রে শ্রম আইনে বাধা থাকায় তা কীভাবে করা যায় সে বিষয়েও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আর যে সব কারখানায় শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার পর্যবেক্ষণ করছে। এ ছাড়া কারখানাগুলোয় পরিদর্শক নিয়োগের ব্যাপারে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নীতিগত সিন্ধান্ত হয়েছে। বিসিএস পরীক্ষায় নন-ক্যাডারভুক্তদের পরিদর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে কেউ যদি তা করতে সম্মত না থাকেন তাহলে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতার মাধ্যমে পরিদর্শক নিয়োগ করা হবে।’

এ সময় মন্ত্রী আরও জানান, সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা বিদেশিদের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে একটি নিবন্ধন লিখেছিলেন। তার সেই নিবন্ধটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি প্রত্যাহের ভূমিকা রাখে।’

মো. ইসরাফিল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের কর্মসূচিতে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাত হাজার ৯৩০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এফবিসিসিআই ও অন্যান্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী হরতালে দেশের অর্থনৈতিক খাতে প্রতিদিন এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।’

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘পোশাক, হিমায়িত মৎস্য, পরিবহন খাতের বাইরে কাঁচাপাট ও পাটজাত দ্রব্য রফতানি ২০১২ সালের চেয়ে ২০১৩ সালে কমেছে। এ ছাড়া ক্ষতি হয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি দোকানে। বিনিয়োগ পরিস্থিতি পড়েছে নাজুক অবস্থায়।’

একই দিন উত্তরদাতা হিসেবে আবির্ভূত হন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। এর আগে তিনি ১৯৮৮ সালে এরশাদ সরকারের উপমন্ত্রী ছিলেন। তবে সে সময় সংসদে তার উত্তরদানের কোনো সুযোগ হয়নি।

(দ্য রিপোর্ট/আরএইচ-এইচআর/এনডিএস/সা/ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৪)