তাজরিনের চেয়ারম্যানের জামিন বাতিল চেয়ে আবেদন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সদ্য জামিনপ্রাপ্ত তাজরিন গার্মেন্টসের চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার মিতার জামিন বালিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। ঢাকা জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুল মজিদের আদালতে এ আবেদন করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খন্দকার আব্দুল মান্নান তার জামিন বাতিল চেয়ে বুধবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে এ আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ২৭ ফেব্রুয়ারি শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। তাদের অবহেলার কারণে তাজরিন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। তারা জামিন পেলে সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাতে পারেন। এ জন্য জামিন বাতিল হওয়া জরুরি। যেহেতু গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার অনেক পরে তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ ছাড়া আসামি জামিন পেলে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। তাই আসামির জামিন বাতিল হওয়া প্রয়োজন।
১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম ইসমাঈল ২০ হাজার টাকা বন্ডে মাহমুদা আক্তার মিতার এক মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। এ ছাড়া প্রতি সপ্তাহের রবিবার তাকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি রবিবার দেলোয়ার হোসেন এবং তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার তাজুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিন চান। কিন্তু আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ ও ৩০৪(ক) ধারা অনুযায়ী ‘অপরাধজনক নরহত্যা’ ও ‘অবহেলার কারণে মৃত্যুর’ অভিযোগ আনা হয়, যার প্রথমটিতে তদের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দ্বিতীয় ধারায় সর্বোচ্চ পাঁচ বছর জেল হতে পারে।
এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক একেএম মহসিনুজ্জামান খান ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে তাজরিনের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে পলাতক ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন ও চেয়ারম্যান মাহমুদা আকতার। আরও পলাতক রয়েছেন- প্রকৌশলী এম মাহবুবুল মোর্শেদ, কোয়ালিটি ম্যানেজার শহীদুজ্জামান, প্রোডাকশন ম্যানেজার মোবারক হোসেন মঞ্জু ও ফ্যাক্টরি ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক।
চার্জশিটে বাকি যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন- প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুলাল, স্টোর ইনচার্জ হামিদুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, সিকিউরিটি গার্ড রানা ওরফে আনারুল, সিকিউরিটি সুপারভাইজার আল-আমিন, স্টোর ইনচার্জ আল-আমিন এবং লোডার শামীম মিয়া। এর মধ্যে আনিসুর রহমান আটক রয়েছেন। বাকি ৬ জন জামিনে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরিন ফ্যাশনসে ওই অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১১২ জন নিহত এবং দুইশতাধিক শ্রমিক আহত ও দগ্ধ হন।
পরদিন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক খায়রুল ইসলাম অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় নাশকতার পাশাপাশি অবহেলাজনিত মৃত্যুর দণ্ডবিধির ৩০৪(ক) ধারা যুক্ত করা হয়।
(দ্য রিপোর্ট/জেএ/এমএইচও/এমডি/এজেড/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৪)