দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সরকারদলীয় দুই এমপিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয় থেকে বুধবার এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম ও উপ-পরিচালক মো. খায়রুল হুদা তাদের নোটিশ করেছেন।

নোটিশে সাতক্ষীরা-৩ আসনের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হককে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি এবং পটুয়াখালী-৪ আসনের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানকে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি তলব করা হয়েছে। দুদক সূত্র দ্য রিপোর্টকে এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ :

অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হকের ব্যাংক ব্যালেন্স গত পাঁচ বছরে বেড়েছে ১০ গুণ। ব্যাংক ব্যালেন্সের অধিকাংশ তার স্ত্রী ইলা হকের নামে। পাঁচ বছর আগে নির্বাচনী মাঠে নামার সময় রুহুল হক এবং তার স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকা ছিল ৯২ লাখ ৩৬ হাজার ১০৮ টাকা। এখন তাদের ব্যাংক ব্যালেন্সের পরিমাণ ১০ কোটি ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৩ টাকা। ২০০৮ সালে স্ত্রী ইলা হকের নামে ব্যাংক ব্যালেন্স ছিল মাত্র চার লাখ ৬৪ হাজার ৩০ টাকা। এখন সাত কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ২৪০ টাকা। এ ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার প্রায় ১৬৫ গুণ। অন্যদিকে রুহুল হকের ব্যাংক ব্যালেন্স ২০০৮ সালে ছিল প্রায় ৮৮ লাখ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে প্রায় দুই কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

নির্বাচন কমিশনে প্রদেয় হলফনামা অনুসারে, সামগ্রিকভাবে ২০০৮ সালের তুলনায় তার অস্থাবর সম্পদ ৪ গুণ বেড়েছে। ২০০৮ সালে তিনি এবং তার স্ত্রীর মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল চার কোটি টাকার কিছু বেশি। ২০১৩ সালে তাদের সম্পদের পরিমাণ ১৬ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ১০ কোটি টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স হিসেবে রাখা আছে। এককভাবে তার স্ত্রী ইলা হকের সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৮ গুণ। আগে তার নামে অস্থাবর সম্পত্তি ছিল মোট ৯৫ লাখ টাকা মূল্যের। এখন তা আট কোটি ৩৯ লাখ ছাড়িয়েছে।

মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ :

মাহবুবুর রহমান গত পাঁচ বছরে ২০ একর জমি থেকে দুই হাজার ৮৬৫ একর জমির মালিক হয়েছেন। পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ছাড়া কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ না থাকা স্ত্রীর নামে এখন এক কোটি ২৬ লাখ ৭১ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে। নিজের ৩৬ লাখ ৩৩ হাজার ১১২ টাকার স্থাবর সম্পদ পাঁচ বছরের ব্যবধানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ কোটি ২৫ লাখ ৬৬ হাজার ৭২ টাকা।

২০০৮ সালের হলফনামায় সাতটি আয়ের উৎস খাতের মধ্যে তার একমাত্র আয় ছিল খণ্ডকালীন রাখি মালামাল থেকে, যার পরিমাণ ছিল বছরে মাত্র দুই লাখ ১৫ হাজার টাকা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে তিনি এখন মৎস্য উৎপাদন ও বিক্রয়কারী। আর এ খাত থেকে তার বছরে আয় হচ্ছে এক কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগে তার ওপর নির্ভরশীলদের কোনো আয়ের উৎস না থাকলেও এখন তার ওপর নির্ভরশীলদের ব্যবসা থেকে বছরে আয় তিন লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া চাকরি থেকে তার বছরে আয় ২০ লাখ ৩৪ হাজার ৭০০ টাকা।

(দ্য রিপোর্ট/এইচবিএস/ এমডি/এএইচ/ ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৪)