‘আমিরাতে শ্রমিক রফতানি বন্ধ নয়, স্থগিত’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমিক রফতানি বন্ধ নয়, স্থগিত রয়েছে।’
জনশক্তি রফতানিতে প্রতিযোগী দেশগুলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে এর জবাব দেওয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
প্রবাসী কল্যাণ ভবনে বুধবার সকাল ১১টায় ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সাঈদ বিন হাজরা আল শেহীর সাক্ষাৎ শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমিক রফতানি বন্ধ কিনা- জানতে চাইলে ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমিক রফতানি বন্ধ নয়, স্থগিত রয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয় আরও সাতটি দেশ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রমিক রফতানি স্থগিত রয়েছে।’
ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ প্রফেশনাল ভিসায় লোক নিতে তারা আগ্রহ দেখিয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছি, আমরা প্রতিটি জেলায় ট্রেনিং ইনস্টিটিউট করেছি। আগামীতে প্রতি উপজেলায় ট্রেনিং ইনস্টিটিউট করে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে লোক পাঠানো হবে।’
‘দেশের কিছু দালালের অব্যবস্থাপনায় চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত লোক সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঠানো হয়েছে। ওই সব লোক অপরাধ সংঘটিত করছে। আমরা দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করেছি। এখন আমরা নিবন্ধিত লোক ছাড়া কাউকে বিদেশে পাঠাব না। আপনাদের দেশে যে ভিসা ট্রেডিং হচ্ছে তা বন্ধের ব্যবস্থা নিন।’
শিগগিরই জনশক্তি রফতানির বিষয়ে আলোচনা করতে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যাবেন বলেও জানান মন্ত্রী।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোন দেশের কত লোক আছে গত দুই মাসে তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হয়েছে বলে রাষ্ট্রদূত মন্ত্রীকে জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ চায় মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন। অতীতে যে টাকা খরচ করে শ্রমিকরা বিদেশে যেত, ৪-৫ বছরেও সে টাকা তুলতে পারত না। এখন অভিবাসন ব্যয় কমানো হয়েছে। মাত্র ৩৩ হাজার টাকায় মালয়েশিয়ায় এবং ১৭ হাজার টাকায় সৌদি আরবে মহিলা শ্রমিক যাচ্ছেন।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করছে এবং শিরশ্ছেদের ঘটনা ঘটছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নবীন হওয়া সত্ত্বেও জনশক্তি রফতানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে। প্রতিযোগী দেশগুলো ঈর্ষান্বিত হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরাও তাদের অপপ্রচারের কাউন্টার দিতে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রেস মিনিস্টার নিয়োগ করে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা সংবাদ মাধ্যমকে জানাব।’
আগামী ২০২০ সালে দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড এক্সপো অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ রাশিয়াকে যে ভোট দিয়েছিল তাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমিক রফতানিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি নিয়ে তাদের কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। বরং তারা বাংলাদেশের ডিপ সিপোর্টে কাজ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে।’
মন্ত্রীর সঙ্গে এ সময় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. খোন্দকার শওকত হোসেন এবং জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক বেগম শামসুন নাহার উপস্থিত ছিলেন।
(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এমএআর/সা/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৪)