ইউসুফের মামলার সমাপ্তি ঘোষণা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতের নায়েবে আমির এ কে এম ইউসুফকে সাজা কিংবা খালাস না দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলার কার্যক্রম সমাপ্তি ঘোষণা করেছে ট্রাইব্যুনাল-২।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইউসুফ অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন।
ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ মামলার সমাপ্তি ঘোঘণা করে এ আদেশ দেন।
আদালত বলেন, যেহেতু একেএম ইউসুফ মৃত্যুবরণ করেছেন। তাই আমরা প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের ডকুমেন্টের ওপর ভিত্তি করে তাকে কোন প্রকার সাজা কিংবা অভিযোগ থেকে খালাস না দিয়েই মামলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্তি ঘোষণা করলাম।
একই সঙ্গে ইউসুফের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আদালতে উপস্থাপনের জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, সকালে ইউসুফকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণার আবেদন করেছিলেন প্রসিকিউশন পক্ষ।
সকালে শুনানিতে প্রসিকিউটর হায়দার আলী আদালতকে বলেন, ইউসুফকে দোষী সাব্যস্ত করে একটা রায় অথবা কমপক্ষে একটা পর্যবেক্ষণ থাকা উচিত। কারণ এটা সাধারণ কোন দাবি নয়। এটা মানবতার ও ইতিহাসের দাবি। কোন রায় দেওয়া না হলে ইতিহাস আমাদেরকে ক্ষমা করবে না।
অপরদিকে, ইউসুফের পক্ষে আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার আদালতকে বলেন, আমাদের দেশের ফৌজদারি কার্যবিধিতে স্পষ্ট কোন আইন নেই যে, আসামি মারা যাওয়ার পর তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে কি না?
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে এটা মানবতার ও ইতিহাসের দাবি। এই দাবির কারণে যেন আদালত বিব্রত না হয় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত।
আইনজীবী সাইফুর রহমান বলেন, ‘একজন আসামি মৃত্যুবরণ করার পর তাকে নির্দোষ ঘোষণা করা’- এই সাধারণ নীতি মানা উচিৎ।
আদালতে প্রসিকিউটর হায়দার ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস এর কয়েকটি কেস রেফারেন্স দাখিল করে বলেন, আসামি মৃত্যুবরণ করার পরও তার রায় দেওয়া হয়েছে।
তখন আদালত বলেন, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস এর রেফারেন্স কি আমাদের এখানে গ্রহণযোগ্য হবে? কারণ এ ট্রাইব্যুনালের কোন রায় তো ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস এ আপিল করা যায় না। সুতরাং আমাদের দেশে কি এমন কোন কেস রেফারেন্স আছে যেখানে এমন কোন আসামির মৃত্যুর পরও তার বিচার অব্যাহত ছিল বা রায় দেওয়া হয়েছে।
হায়দার আলী বলেন, তা হলে ইউসুফকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় অথবা কোন পর্যবেক্ষণ দেওয়া হোক। কারণ এটা মানবতার দাবি।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একেএম ইউসুফ অসুস্থজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু পরিবারের দাবি, সুচিকিৎসার অভাবে তিনি মারা গেছেন।
বুধবার এ মামলায় যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের দিন ধার্য ছিল। এর আগে, ইউসুফের পক্ষে তার ছেলে একেএম মাহবুবুর রহমান সাফাই সাক্ষ্য দেন।
গত বছরের ১ আগস্ট একেএম ইউসুফের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। তাকে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটসহ চার ধরনের ১৩টি অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি হত্যা, সাতটি গণহত্যা এবং অগ্নিসংযোগ ও একটি লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/এসএ/এমএআর/এমডি/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৪)