দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : পৃথিবীর বিকাশের পথে চিত্রশিল্প গুরুত্বপূর্ণ এক প্রাচীন মাধ্যম। তারপর থেকে মানুষ আবিষ্কারের নেশায় যত বেশি আগ্রহী হয়েছে এ শিল্পটি ততই অর্থবহভাবে ধরা দিয়েছে সমকালীন মানুষের মনে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা যেহেতু অতীত ও বর্তমানের সেতুবন্ধন তৈরি করে দেয়, তাইতো সংস্কৃতি সন্ধানী এ মেলায় বরাবরের মতই চিত্রশিল্পীদের অবাধে ছবি আঁকার কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে না কেউ।

বাংলা একাডেমির মেলাঙ্গনের বাইরে পথে সারিবদ্ধভাবে বসেছে বেশ কয়েকজন চিত্রশিল্পী। ওরা সবাই পেন্সিল স্কেচে দশ মিনিটে একজন মানুষের পূর্ণাঙ্গ ছবি সম্পন্ন করে। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক নির্দিষ্ট সময়ে ছবি আঁকা তো হয়ই, কোনো কোনো ছবি পাঁচ মিনিটে সম্পন্ন হতেও দেখা যায়।

যখন একজন অঙ্কনে ব্যস্ত সময় কাটায় একই সময়ে অন্যজন অলসভাবে সময় পার করতে দেখা যায়। কিন্তু দিনের শেষে প্রতিজনেই প্রায় সাত-আটজনের প্রতিকৃতি আঁকেন। বাড়ি ফেরার পথে হাজার খানেক টাকা পকেটে নিয়ে তাদের হাস্যোজ্জ্বল বিদায় লক্ষ্য করা যায়।

সারা বছর বাণিজ্যমেলা বা অন্যান্য জনবহুল কোনো আয়োজনে উপস্থিতি তেমন লক্ষ্য করা যায় না তাদের। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় থাকে তাদের সরগরম উপস্থিতি। এর কারণ জানতে চাওয়া হলে- তাদের একজন শিল্পী রাজু সাহা বলেন, ‘যে দিন শিল্পীর খাতায় নাম লিখেছি সে দিনই সবকাজে বাণিজ্যের চিন্তার সমাধি দিয়েছি। তবে ভালো কাজ করলে অনেক সময় অর্থ সমাগম তো হয়েই। এখানে আমরা বেশ ভালো টাকা উপার্জন করি এ কথা সত্যি, সেই সঙ্গে আমাদের অবস্থান মেলার সৌন্দর্যকে কিছুটা হলেও বেগবান করেছে বলে আমি মনে করি।’

অন্যান্যদের ভাষ্য- বই কেনা-বেচা, বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা সবই ছিল এ মেলায়। ছিল না ছবি এঁকে শিশু মনে বিস্ময় জাগানোর অনন্য চেষ্টা। এ কাজ নিজেদের কিছুটা আর্থিক কষ্ট লাঘবের পাশাপাশি সে শূন্যতাটাও পূরণ করেছে।

মেলার নীতিমালায় তাদের অংশগ্রহণের কথা না থাকলেও একটি প্রাচীন শিল্পের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তাদের সৃজনশীল কাজে কোনো রকম বাধা না দেওয়ায় মেলা সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তারা।

(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এপি/সা/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৪)