কষ্টের ম্যাচ তারপরও ইতিবাচক
রবিউল ইসলাম, চট্টগ্রাম থেকে : অনেক দিন পর দলে ফিরেই অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন মাশরাফি বিন মতুর্জা। কিন্তু সফল হতে হতে ব্যর্থ পারেননি। বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ২ রানে। এর জন্য ভাগ্যকেই দুষছেন মাশরাফি। শেষ ওভারে ১৭ রান প্রয়োজন থাকলেও সাকিব-তামিমরা নিতে পেরেছেন ১৪ রান। ২ রানে হেরে ভগ্ন হৃদয়ে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। প্রথম টোয়েন্টি-২০ ম্যাচের নানাদিক নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। এরই চুম্বক অংশ তুলে ধরা হয়েছে দ্য রিপোর্ট পাঠকদের জন্য-
প্রশ্ন : এত ক্লোজ ম্যাচ হেরে গেলেন; ড্রেসিং রুমের অবস্থা কেমন ?
মাশরাফি : খুব হতাশ। ম্যাচটি আমরা শেষ করতে পারিনি। সবাই খুব আফসেট। সবারই খুব খারাপ লাগছে। খুব ক্লোজ ম্যাচ হয়েও র্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বর দলের সঙ্গে ২ রানে হেরে গিয়েছি। সবাই কষ্ট পেয়েছে। কিন্তু এটা ইতিবাচকভাবেই নিতে হবে। সামনে আরও একটা ম্যাচ আছে। ক্যামবেক করতে হবে।
প্রশ্ন : নাসিরের ওই সময়ে বিদায় নেওয়াটা ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ছিল কী না ?
মাশরাফি : আমরা কয়েকজন খেলোয়াড় মিস করছি। নাসির এ ধরনের ম্যাচে অনেক যোগ্য। অনেক ম্যাচ সে খেলেছে এবং জিতিয়েছে। একটি ম্যাচে যে কোনো কিছুই হতে পারে। ও যেভাবে আউট হয়েছে; তা ৬ হলে আগেই জিতে যেতাম। আসলে যখন হয় না, তখন ফল পক্ষে থাকে না। ওই জায়গায়টায় আমরা যেমন চেয়েছি, তেমন হয়নি; এ কারণে আমরা পিছিয়ে গেছি।
প্রশ্ন : টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটা কি সঠিক ছিল ?
মাশরাফি : প্রথমত আমরা সব সময় চেজ করতে পছন্দ করি। এ উইকেটে আমরা প্রথম টোয়েন্টি-২০ ম্যাচ খেলছি। সুতরাং উইকেটি কেমন এটাও দেখার ব্যাপার ছিল। সেই সঙ্গে বোলিং আমরা ভালোই করেছিলাম। ব্যাটিংও ভালো করেছি। আমরা সব সময় যেটা পছন্দ করি। সব সময় সব দলই চায় তাদের কেপাবল পজিশনে থাকতে।
প্রশ্ন : চাপটা আসলে কখন আসলো বলে মনে করছেন ?
মাশরাফি : আমরা যে সময়টা ব্যবহার করতে চাচ্ছিলাম; ওই সময়ে সাকিব আউট হয়েছেন। আবারও একটি জুটি হলো; নাসির আউট হয়ে গেল। যখন ওভারগুলো ব্যবহার করার প্রয়োজন ছিল; সেখানেই আমরা পিছিয়ে গেলাম। শেষ দিকে এসে আমরা খুব ভালো কভার করে ফেলেছিলাম। মালিঙ্গার বলে ১০/১২ নিয়ে নেওয়া টোয়েন্টি-২০ বিশেষ করে কঠিন। বিশ্বক্রিকেটে সে অনেক সফল বোলার। তারপরও আমরা কভার করে ফেলেছিলাম। আমাদের হাতে উইকেট ছিল। এটা একটি ইতিবাচক দিক। ১৪-১৫-১৬ ওই ওভারগুলোতে আমরা জুটি করার পর পরই উইকেটটি পড়ে গেছে।
প্রশ্ন : ম্যাচে কিছু ভালো ক্যাচ ছিল?
মাশরাফি : অবশ্যই। টোয়েন্টি-২০ খেলাটাই এমন একটি ভালো ক্যাচ; একটি ভালো ওভার পুরো খেলা চেঞ্জ করে দেয়। টোয়েন্টি-২০ হয়ত এর প্রভাবটা বেশি পড়ে। টেস্ট, ওয়ানডে ও টোয়েন্টি-২০ ফিল্ডিংটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শেষ টেস্টে আমরা ফিল্ডিটা একটু বাজে করেছি। আমরা জানি আমাদের খুব ভালো কিছু ফিল্ডার আছে। তারা ক্যাপাবল ক্যাচ নেওয়ার জন্য এবং অল্প সুযোগকে বড় সুযোগ বানাতে পারে। আমি মনে করি ফিল্ডিংয়ের জন্যই আমরা বোলিংয়ের সময় একটা ভালো পজিশনে যেতে পেরেছিলাম। দিনশেষে আমরা ২ রানে হেরে গিয়েছি।
প্রশ্ন : টোয়েন্টি-২০ জেতার জন্য আমরা ক্যাপাবল কিনা ?
মাশরাফি : সন্দেহ নেই, আমরা খুব ভালো খেলেছি। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে, নতুন খেলোয়াড়; যেমন আরাফাত সানী ভালো বোলিং করেছে। মিথুন এমন পজিশনে ব্যাটিং করতে এসেছে ওকে শট খেলতে হয়েছে। অনেক কঠিন পজিশনে তাকে ব্যাট করতে হয়েছে। তাপরও তরুণ যারা আছেন; ভালো খেলেছে তারাও। সেই সঙ্গে যারা সিনিয়র খেলোয়াড় ছিল তারাও ভালো খেলেছে। আমি বলব যে, টোয়েন্টি-২০তে এক সঙ্গে সবাই পারফর্ম করতে পারে না। একটা ম্যাচ জেতার জন্য হয়ত বা ২ জন ব্যাটসম্যান ৩ জন বোলার অথবা ৩ জন ব্যাটসম্যান ২ জন বোলারের ভাল খেলতে হয়। আমরা সব সময় ইকুয়েল ছিলাম শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। আমি মনে করি, অনেক কিছু আমরা এ ম্যাচ থেকে নিতে পারি। বিজয় টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ার পর টোয়েন্টি-২০ দলে ঢুকেই দারুণ ইনিংস খেলল। আমি মনে করি, অনেক কিছু পজেটিভ আছে এ ম্যাচ থেকে।
প্রশ্ন : জয়ের জন্য ভিত তৈরি ছিল কি?
মাশরাফি : ভিত আমাদের তৈরি ছিল। আমাদের সবচেয়ে সেট ব্যাটসম্যান ক্রিজে ছিল। সেই সঙ্গে বোলাররা আন্ডার প্রেসারে ছিল। আমি বলব, ভাগ্য আমাদের সহায় ছিল না। মিসটাইম হলে হয়ত চার হয়ে যেতে পারত। খুব দুর্ভাগ্য যে, বলটা লেগে উঠে গেছে। আমার মনে হয় ক্রেডিট দেওয়া উচিত বিজয়কে। ও একাই ম্যাচটি টেনে নিয়ে গেছে। না হলে হয়ত ম্যাচটি একপেশে হতো।
(দ্য রিপোর্ট/আরআই/ওআইসি/এএস/এএল/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৪)