‘২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ’
গাজীপুর সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, প্রযুক্তিনির্ভর মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করব। সকলে মিলে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে বিশ্বদরবারে মর্যাদাপূর্ণ আসনে তুলে ধরব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৪তম জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশ ও জনগণের কল্যাণে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিএনপি-জামায়াত জোটের সেই অচলাবস্থা কাটিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছি। দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২৬ শতাংশে নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় ৬৩০ ডলার থেকে ১ হাজার ৪৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে।
রিজার্ভ ১৮ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রপ্তানি আয় দ্বিগুণ বেড়ে প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বেড়েছে। আত্ম কর্মসংস্থানের পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করা হয়েছে। নারী ও শিশু মৃত্যুর হার দ্রুত হ্রাস পেয়েছে। সহস্র্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি নতুন ব্যাটালিয়ন গঠনের অনুমোদন দিয়েছি। ব্যাটালিনের সকল সদস্যদেরকে ৭ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার অটোমেটিক রাইফেল প্রদান করা হয়েছে। ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যরা এখন সকল বাহিনীর সঙ্গে তালমিলিয়ে কাঙ্খিত ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে ১৩ হাজার ৯৭ জনের চাকরি স্থায়ী করা হয়েছে। তাদের মূল বেতনের ৩০ শতাংশ হারে ঝুঁকি ভাতা ও মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করা হয়েছে। উৎসব ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। টাইম স্কেল, বিশেষ বিবেচনায় ২টি বার্ষিক বর্ধিত বেতন ও রেশন ভাতা ৫০ থেকে ৮০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে ৫ লাখ ও গুরুতর আহত হলে ১ লাখ টাকার আর্থিক অনুদান প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যাটালিয়ন আনসারদের পারিবারিক রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্য পেশাগত দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সর্বোচ্চ প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। সাহস নিয়ে কাজ করবে, সুশীল আচরণ করবে। ক্রীড়া ক্ষেত্রে এই বাহিনী সর্বদাই সাফল্যের উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখে চলছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে সফিপুর আনসার একাডেমিতে আসেন। পরে সেখানে সকাল সাড়ে ১০টায় আনসার একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছান। সেখানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও মহাপরিচালক নাজিম উদ্দিন তাকে স্বাগত জানান। পরে তিনি ইয়াদ আলী প্যারেড রাউন্ডে খোলা জিপে পরিদর্শন করেন এবং আনসার সদস্যদের কুচকাওয়াজ, সালাম গ্রহণ করে ভাষণ দেন।
আনসার ও ভিডিপিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বীরত্বপূর্ণ ও সেবামূলকসহ ৪ ক্যাটাগরিতে ৮০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্যকে পদক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সিনিয়র সচিব সিকিউকে মুসতাক আহমেদ, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নাজিম উদ্দীন, গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শাহনেওয়াজ দিলরুবা খান, কালিয়াকৈর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সিকদার, কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
(দ্য রিপোর্ট/এমএমএফ/এপি/এএল/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৪)