আহমেদ রউফ
নীল রঙের ছেলেটি

নীল রঙ!
ভালোবাসার রঙ।
আবার বেদনারও...
প্রিয় রঙ!
নীল।
ভালোবাসে!
ছেলেটি।
ভালোবাসে হলদে রঙও...
তার সাথে হলদে রঙের মেয়েটিকে।
ধ্রুবনীল ছেলেটির নাম। ছবি আঁকে। ছবি আঁকতে ভালো লাগে তার। তাই রঙ আর তুলিই যেন তার সব। প্রোপেশনাল কোনো আঁকিয়ে নয়।
আঁকে।
ছবি আঁকে!
ভালোবাসার সব রঙ মিশিয়ে। মাঝে মাঝে হাঁরিয়ে যায় প্রকৃতির মায়াজালে। সবুজে ঘেরা প্রকৃতির মাঝেই যেন ফিরে পায় তার সুখ শান্তি আর ভালোবাসা। সৃষ্টিকর্তার এই অপার লীলাভূমিতে কতই না সুন্দর তার সৃষ্টি। আর সৃষ্টিকর্তার এই অপূর্ব সুন্দর সৃষ্টির প্রশংসা করেন ধ্রুবনীল। ধ্রুবনীল এর জন্ম কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার ধনু নদীর বাঁকে। নদী তাকে টানে। নদীর ঢেউ তাকে চেনে। জ্যোৎস্না রাত চারদিক আলোয় ঝলমল করছে। ধ্রুবনীল এর আর তর সইছে না। এক্ষণি যেতে হবে তাকে। জ্যোৎস্না রাতে ছবি আঁকবে সে, জ্যোৎস্না জলের। যে ভাবনা সে কাজ। ধ্রুবনীল চলে যায় সেই ধনু নদীর তীরে। নদীর ধারে বসতেই যেন বাউরি একটা বাতাস তার গায়ে শিহরণ জাগিয়ে যায়। সেই শীতল বাতাসে ধ্রুবনীল এর একটা ভালোলাগার সৃষ্টি হয়। আর এই ভালোলাগাই যেন বার বার নিয়ে আসে তাকে ধনু নদীর তীরে। জ্যোৎস্না রাতে যখন জ্যোৎস্নার আলোয় নদীর পানি ঝিলমিল করতে থাকে তখন ধ্রুবনীলের মনটা ভরে উঠে। মনের আনন্দে তখন নীল জ্যোৎস্নার ছবি আঁকতে থাকে। সাথে নীল জল।
ছবি আঁকছে ধ্রুবনীল।
জ্যোৎস্নার ছবি।
নীল জ্যোৎস্না।
নীল জল।
ধ্রুবনীল তার আঁকা ছবিটির দিকে তাকিয়ে, নিজেই চমকে উঠেন। একি ভালোবাসার নীল রঙ মাঝে হলদে রঙে আঁকা একটি মেয়ের ছবি। ঠিক যেন হলদে রঙের মেয়েটি।
একটি ছবি!
একটি মেয়ে!
হলদে রঙের জামা!
ধ্রুবনীল ভাবে, আর মনে মনে বলে, একটি মেয়ে এত সুন্দর হয় কী করে। আমি ভাবতে পারছি না, কেন আমার কল্পনার সঙ্গে মিশে গেল ছবিটি। যখন মিশেই যাবে তবে কেন ধরা দিবে না। আমার যে তার সঙ্গে অনেক কথা বলার আছে। হঠাৎ আমার মনে হল- বাতাসের শো-শো শব্দের সাথে একটি আওয়াজ আসছে। মানুষ মন থেকে যা চায় তা পায়, কিন্তু কোথাও কোনো মানুষ দেখতে পাচ্ছি না তো।
হঠাৎ ধ্রুবনীল শুনতে পায়
: হয়তো পেয়েছেন!
: কী?
: যাকে চেয়েছেন।
: কাকে?
: মেয়েটিকে।
: কোন মেয়েটি?
: হলদে রঙের মেয়েটি।
: কে আপনি?
: আমি...হা হা হা...
: হাসছেন কেন?
আর কোনো কথা নেই। কোথাও কোনো বাতাসের শব্দ পর্যন্ত নেই। আছে শুধু জ্যোৎস্নার নীল আলো আর নীল রঙের ছেলেটি।