রাজশাহী অফিস : মহানগরীর হেতেম খাঁ এলাকায় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় জামায়াত নেতা ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন ও এমাজ উদ্দিন মণ্ডলসহ জামায়াত-শিবিরের ৩৬ নেতাকর্মীর নামে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালিয়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম রাজশাহী মহানগর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টার দিকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা নগরীর হেতেম খাঁ এলাকায় মিছিল নিয়ে লোকজন ও যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে উচ্ছৃঙ্খল আচরণের মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে বোয়ালিয়া থানার উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম অন্য পুলিশ সদস্যদের নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদের এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। কিন্তু পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মিছিলে অংশগ্রহণকারী নগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এমাজ উদ্দিন মণ্ডল ও ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন, শিবিরকর্মী শরিফুল ইসলাম তুহিন, সিদ্দিক হোসেন, ডা. আনোয়ার, আশরাফুল আলম ইমন, সাইফুদ্দিন ইয়াহইয়াসহ ৪৫০ থেকে ৫০০ জন উচ্ছৃঙ্খল জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী ইটপাটকেল, রড, ককটেলসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

এ সময় পুলিশ প্রথমে বাঁশি বাজিয়ে ও পরে লাঠিচার্জ করে হামলাকারীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা আরও বেপরোয়া হয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল, ককটেলসহ বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় পুলিশ জনসাধারণের জানমাল রক্ষার স্বার্থে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে টিয়ারশেল, শর্টগান এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

অভিযোগপত্রে উল্লিখিত এজহারভূক্ত পলাতক আসামিরা হলেন- নগরীর জামায়াত নেতা এমাজ উদ্দিন মণ্ডল, নাটোরের হাবিব, পবার আতাউর, নগর জামায়াত নেতা ডা. জাহাঙ্গীর, নাটোরের শরিফুল ইসলাম তুহিন, রাবি শিবিরের সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন, নগরীর শিবিরকর্মী বিপ্লব, নগরীর মতিহার থানার আশিকুর রহমান মইফুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মানিক মিয়া, মেহেরচণ্ডী এলাকার মিজানুর রহমান ও বাগমারা উপজেলার ফিরোজ আলম মামুন রাসেল।

এজহারভূক্ত গ্রেফতার আসামিরা হলেন- রাবি শিবিরের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন ইয়াহইয়া, কাজলা এলাকার জনি ওরফে জহুরুল ইসলাম।

অভিযোগপত্রে উল্লিখিত সন্দিগ্ধ গ্রেফতার ও অভিযুক্তরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আতিক হাসান, চারঘাট উপজেলার নুরুল ইসলাম, বগুড়া জেলার আবু হানিফ, পুঠিয়া উপজেলার আসিকুর রহমান, তানোরের হাসান আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সোহেল রানা, নওগাঁর মান্দার ইসমাইল হোসেন, বাঘা উপজেলার মাহাবুর রহমান, গোদাগাড়ী উপজেলার ওবাইদুল্লা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বেলাল উদ্দিন, আবদুল্লাহ, পাবনার ঈশ্বরদীর আরিফুল ইসলাম, আবদুল কাদের বাপ্পি ও মিনহাজুল ইসলাম, নগরীর মুশরইল এলাকার আবু ছায়েম, খুলনা জেলার কবির হোসেন সুমন, পঞ্চগড়ের আরিফুর রহমান, যশোরের মতিউর রহমান, গোদাগাড়ীর আবদুল্লাহ কাফি, তানোরের মোহাম্মদ আলী, গোদাগাড়ীর জিন্নাত বাদশা ও নাটোরের তরিকুল ইসলাম।

অভিযোগপত্রে সঠিক নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় ছয়জন আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। এরা হলেন- সিদ্দিক হোসেন, ডা. আনোয়ার, আবদুল বাতেন, আশরাফুল ইসলাম, শাহাদত হোসেন ও জোহা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকার কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুরুল হুদাকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচজে/জেএম/এএল/ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৪)