দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘কাজী ইমদাদুল হক ছিলেন সমসাময়িক লেখকদের মধ্যে আধুনিক’। অনুষ্ঠানে ‘কাজী ইমদাদুল হক : এক বিস্মৃত মনীষা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রেজিনা সুলতানা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন- বিশ্বজিৎ ঘোষ, মনজুরুর রহমান এবং ফারজানা সিদ্দিকা। সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ আবুল মকসুদ।

কাজী ইমদাদুল হক সম্পর্কে প্রাবন্ধিক বলেন, ‘কাজী ইমদাদুল হকের আবদুল্লাহ উপন্যাসটিকে বাঙালি মুসলমান সমাজের সার্থক দর্পণ বলা যায়। বুদ্ধির অন্ধতার বিরুদ্ধেই ছিল কাজী ইমদাদুল হকের কলম-যুদ্ধ। তার সামগ্রিক মূল্যায়ন করা খুব সহজ কাজ নয়। তিনি বলেন, তাকে বিচার করতে হবে তার কালের মানদণ্ডে। ইতিহাসের যে সময় তিনি জন্মেছিলেন এবং বড় হয়ে উঠেছেন, সেটিকে ক্রান্তিকাল বলা যায়। নানারকম সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈরিতার ভেতর দিয়েই তার যাত্রা শুরু। বলা যায় যে, বৈরিতা অতিক্রম করেই তার চলিষ্ণু পদক্ষেপ ক্রমশ একটি শক্ত ভূমি খুজে নেওয়ার চেষ্টায় নিমগ্ন ছিল। তার প্রদর্শিত সাহিত্যপথ বেয়েই পরবর্তী প্রজন্মের বহু লেখক সাহিত্যিকরা হেঁটেছেন এবং আমাদের বর্তমানকে সমৃদ্ধতর করে তুলেছেন। পথিকৃৎ হিসেবে কাজী ইমদাদুল হক সর্বদাই থাকবেন অগ্রগণ্য।’

আলোচকবৃন্দ বলেন, ‘স্ব-সমাজের মঙ্গলকামী ছিলেন বলেই কাজী ইমদাদুল হক বঙ্গীয় মুসলিম সমাজে বিদ্যমান রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন। অন্ধভক্তির মূলোৎপাটনের জন্য তিনি সাহিত্যিক সক্রিয়তাকে কাজে লাগিয়েছেন। সমাজের অনগ্রসরতার পাশাপাশি অভূতপূর্ব সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথাও তিনি তুলে ধরেছেন। তারা বলেন, বাংলা উপন্যাসের বস্তুনিষ্ঠ গবেষণায় কাজী ইমদাদুল হক অগ্রগণ্য স্থান পাওয়ার দাবিদার। কারণ, উপন্যাসের কাঠামোয় তিনি সময় ও সমাজের শিল্পিত-দ্বান্দ্বিক রূপায়ণ ঘটিয়েছেন।

সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘কাজী ইমদাদুল হক ছিলেন তার সমসাময়িক মুসলমান লেখকদের মধ্যে অগ্রসর, আধুনিক ও অসাম্প্রদায়িক। তিনি ছিলেন একজন অবিচল বাঙালি জাতীয়তাবাদী। শুধু সাহিত্য নয়; পাশ্চাত্যের দর্শন ও বিজ্ঞানেরও তিনি ছিলেন একজন গভীর পাঠক।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এপি/এজেড/ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৪)