কৈশোরের প্রেমিকাকে বিয়ে করা তারকারা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : প্রেমে পড়তে নির্দিষ্ট কোনো বয়স লাগে না। সব বয়সের সবাই যখন তখন প্রেমে পড়তে পারেন নিজের ইচ্ছেমতো। তবে কৈশোরের প্রেম মারাত্মক। কেননা এই সময়ের প্রেম হয় নিরঙ্কুশ ও পরিচ্ছন্ন। প্রেমের তীব্রতা থাকা সত্বেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই প্রেম ভেঙে যায়।
তবে, সারা জীবন এই প্রেমের কথা আর ভোলা যায় না। মনের গহীনে থেকে যায় কোনো কিছু একটার খচখচানি। আর যারা তার কৈশোরের প্রেমে ঘর বাঁধতে পারেন তাদের কথা আলাদা। জীবনযুদ্ধে সফলতা অর্জন করতে পারলে এরাই হয়ে ওঠেন সমাজের দৃষ্টান্তমূলক জুটি। বলিউডেও রয়েছে তেমনই কিছু প্রেমের গল্প, যারা নিজের কৈশোরের আবেগকে মূল্য দিয়ে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন নিজের প্রেমিকাকে। পরবর্তীতে যাদের নাম ও খ্যাতি হওয়া সত্ত্বেও নিজের জীবনের প্রথম প্রেমের সঙ্গে তারা প্রতারণা করেননি।
বয়সে সে সময়ের কিশোর-তরুণ আর আজকের মহাতারকাদের কৈশোরের প্রেমের গল্প শোনাব দ্য রিপোর্টের পাঠকদেরকে ভালোবাসা দিবসের এই বিশেষ আয়োজনে।
শাহরুখ খান
বলিউডে ‘কিং অব রোমান্স’ একজনই। তিনি শাহরুখ খান। প্রথম দর্শনের প্রেম বলে যে ব্যাপারটি প্রচলিত আছে, তেমনটিই হয়েছে শাহরুখের বেলায়।
স্কুলজীবনে গৌরির সাথে তার প্রেম শুরু হয়। দীর্ঘসময় প্রেম করে এই জুটি ১৯৯১ সালের ২৫ অক্টোবর বিয়ে করেন। আজ যে শাহরুখ খানকে চেনে পুরো দুনিয়া, তার পেছনে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে গৌরির প্রেরণা।
অভিনয়ের সুবাদে শাহরুখ অনেকেরই প্রিয়। বিশেষ করে তরুণী হৃদয় হরণ করা নাকি তার জন্য কোনো ব্যাপারই নয়। এমনি এমনি তো আর রোমান্সের বাদশাহ বলা হয় না তাকে! দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে শাহরুখ এখনও অটুট আছেন।
বিভিন্ন সময় তার নামের সঙ্গে বলিউডের তারকা অভিনেত্রীদের নাম যুক্ত হলেও শাহরুখ আস্থা রেখেছেন তার শৈশব-কৈশোরের সেই প্রেমকে। ভালোবাসা ও বিশ্বাসের ভেলায় চড়ে এগিয়ে চলেছে শাহরুখ খান ও গৌরি খানের সংসার জীবন।
ইমরান খান
তরুণ হৃদয়ে ঝড় তোলা অভিনেতা ইমরান খান এবং অবন্তিকা মালিক যখন তাদের প্রেম শুরু করেন তখন ইমরানের বয়স মাত্র ১৯ বছর। অন্য সবার মতোই ইমরানের প্রেম নিয়ে ছিল পরিণয়ের আকাঙ্ক্ষা। কিশোরবেলাতেই দ্রুত সে অবন্তিকাকে নিজের ঘরে তুলতে চাইছিলেন। হঠাৎ অবন্তিকাকে চমকে দিয়ে ইমরান তার বার্থ ডে পার্টিতে প্রপোজ করে বসলেন। এরপর ডেটিং করা হলো। অবন্তিকা ইমরানের দুঃসময়ে তার পাশে ছিলেন, যখন সে বলিউডে নিজের নাম লেখাতে কঠোর পরিশ্রম করছেন। প্রেমিকার চেয়ে বেশি ছিল তার সেই অবদান। সে কারণেই পরিবারের সম্মতিতে ২০১১ সালের ১০ জানুয়ারি বিয়ে করেন এই জুটি। ইমরান খানের কৈশোরের মুগ্ধতা তাকে সফলতা এনে দিয়েছে।
ফারদিন খান
একটি চমৎকার প্রেমের গল্প আছে ফারদিন খান ও নাতাশা মাধবানির জীবনে। খুব অল্প বয়সে তারা একে অপরকে পছন্দ করতেন। এরপর নাতাশা যখন লন্ডনে বসবাস করতে রীতিমতো যুদ্ধ করছিলেন, সেই সময়ে ফারদিন তাকে প্রপোজ করেন, তার পাশে দাঁড়ান। ফারদিন খুবই স্টাইলিস্টি প্রপোজাল তুলে ধরেন নাতাশার কাছে। সে তার হৃদয়ের কথা কয়েকটি জাদুময় বাক্যে উপস্থাপন করেন। সে সব ভালো লাগে নাতাশার। তাই আর দেরি না করে রাজি হয়ে যান। আসলে নাতাশার মনেও তো একই চাওয়া। পরবর্তীতে মুম্বাইয়ের আম্বে ভ্যালিতে ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে বিয়ে করেন তারা। ‘ভদ্র ছেলে’ খেতাব পাওয়া ফারদিন তুখোড় অভিনেতা ফিরোজ খানের সন্তান।
জায়েদ খান
অনেকেই হয়তো ভালোবাসার মানে শুধু বন্ধুত্বই বোঝেন। সেই বন্ধুত্ব ধরে রাখতেই কেউ কেউ গলায় পরেন বিয়ের মালা। অনেকটা বন্ধুত্বের খাতিরেই যেন সেই বিয়ে। বলিউড তারকা জায়েদ খান ও তার স্ত্রী মালাইকা পারেখ তাদের বন্ধুত্ব বজায় রেখে চলেছেন সেই স্কুল জীবন থেকেই। একে অপরের পছন্দ-অপছন্দ, বিশ্বাস ও স্বপ্ন ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন সেই সব দিনের ডেটিংগুলোতেই। তবে মালাইকার সঙ্গে বন্ধুত্ব করার জন্য দীর্ঘদিন ঘুরঘুর করতে হয়েছে জায়েদকে। এই জুটি বিয়ে করেন ২০০৫ সালে এবং এখন পর্যন্ত সেভাবেই আছেন।
হৃত্বিক রোশন
এটি কোনো গল্প কথা নয়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি হৃত্বিক রোশন সুজান খানকে প্রথম দেখেছেন একটি ট্রাফিকে। এদিকে, হৃত্বিকের ট্রাফিক থমকে দাঁড়ায় তখনই। সে সময় তার এই ভালোলাগা ভালোবাসায় রূপান্তর না হলেও পরবর্তীতে হৃত্বিক যখন ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং কোর্স সম্পন্ন করেন, তখন সুজান তার জীবনে ফেরত আসেন। দীর্ঘ ৫ বছর প্রেম শেষে তারা বিয়ে করেন ২০০০ সালে। বলিউডে এই দম্পতি ভালোবাসা ও পারস্পারিক সম্পর্কের সমন্বয়ে দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠেন। হৃত্বিক তার কৈশোরের ভালোবাসার মূল্য দিয়েছেন বলেই মনে করেন বলিউডবাসী। তবে তাদের এই ভালোবাসায় হয়তো কারো নজর পড়েছে। আর সেজন্যই গেল বছরের শেষ দিকে ভেঙে যায় তাদের ১৩ বছরের দাম্পত্য ও ৫ বছরের প্রেমের সম্পর্কের সময়। মোট ১৮ বছরের প্রেম হাওয়ায় মিলিয়ে যায় দুজনের আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্তে।
(দ্য রিপোর্ট/এআর/ডব্লিউএস/এজেড/ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৪)