সিরাজগঞ্জ শিল্পপার্ক
১৪ বছরে কাজ হয়েছে ২১ ভাগ!
একে একে কেটে গেছে ১৪ বছর। বাড়তি ব্যয় যোগ হয়েছে ২৯২ কোটি টাকা। কিন্তু শেষ হয়নি সিরাজগঞ্জ শিল্পপার্ক স্থাপন। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ২১ ভাগ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্প এলাকাকে নদী ভাঙনের হাত থেকে বাঁচাতে বাঁধ নির্মাণ করতে সময় বেশি লাগায় শিল্পপার্ক স্থাপনের কাজ এখনও শেষ হয়নি।
সিরাজগঞ্জ শিল্পপার্ক স্থাপন প্রকল্প সংক্রান্ত জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা জানান, দ্বিতীয় মেয়াদে বাঁধ নির্মাণের শর্ত সাপেক্ষে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সায়দাবাদ ও কালিয়া হরিপুর এলাকায় ৪০০ একর জমিতে শিল্পপার্কটি গড়ে তোলার অনুমোদন দেওয়া হয়। বিসিকের উদ্যোগে নদীর গতিপথ চিহ্নিত করা হলেও বাঁধ নির্মাণ কাজ এখনও শুরু হয়নি। এতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিরাজগঞ্জ শিল্পপার্ক স্থাপন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নীতিগত অনুমোদন দেয় তৎকালীন সরকার। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করতে না পারায় ২০০৪ সালে প্রকল্পটি সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে বাদ দেওয়া হয়।
পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতির কথা চিন্তা করে শিল্পপার্ক স্থাপনে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পুনরায় সিদ্ধান্ত নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রকল্পটি অননুমোদিত ও বরাদ্দহীনভাবে এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০১০ সালের ৩১ আগস্ট শর্ত সাপেক্ষে প্রকল্পটি অনুমোদন করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। শর্ত পূরণ করে ২০১১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি একনেকে প্রকল্পটির অনুমোদনপত্র জারি করা হয়। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৪৮৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকাল ধরা হয় ২০১০ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত।
প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) আমিনুল হক বলেন, ‘ব্যয় বাড়লেও এবার প্রকল্পটি নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হবে।’
তিনি জানান, ইতোমধ্যে প্রকল্পের জমির মূল্য ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধ, জমি অধিগ্রহণ ও দখল বুঝে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ প্রায় ২১ ভাগ শেষ হয়েছে। এখন প্রকল্প এলাকায় ভূমি উন্নয়নের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য কার্যক্রমও এগিয়ে চলছে।
শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত এ প্রকল্পে ১০০ কোটি ৭১ টাকা ব্যয় হয়েছে। এ ছাড়া ১০১৩-১৪ অর্থবছরে ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
বিসিক সূত্রে জানা গেছে, এ শিল্পপার্ক নির্মাণ কাজ শেষ হলে এতে প্রায় ২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এ শিল্পপার্কে দুই ক্যাটাগরিতে মোট ৮০১টি শিল্পপ্লট নির্মাণ করা হবে। যার মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির (২০ হাজার বর্গফুটের) ৩৬৭টি প্লট এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির (১০ হাজার বর্গফুটের) ৪২৫টি প্লট থাকবে। পাশাপাশি প্রকল্পের সঙ্গে সড়ক, রেল ও জলপথে যোগাযোগের সুবিধা থাকবে।
শিল্প কারখানা স্থাপনে আমদানি বিকল্প স্থানীয় ও রফতানিমুখী কৃষি খাতের শিল্প স্থাপনের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।
শিল্পপার্কে কারখানার বর্জ্য যাতে পরিবেশ দূষণ ঘটাতে না পারে, সে জন্য প্রতিটি শিল্প কারখানার বর্জ্য শোধনাগার প্রকল্প (ইটিপি) স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি লেক স্থাপনসহ সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা হবে।
(দ্য রিপোর্ট/এআই/এনডিএস/সা/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৪)