দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ‘লালন সাঁই দেহতত্ত্বের আধারে মূলত সহজানন্দের সাধনা করেছেন। সহজাত মানব প্রবৃত্তিগুলো পূর্ণভাবে তুষ্ট করার সুকঠিন সাধনা ছিল এটি। সহজ সাধনায় দেহে আমরা অনুভব করতে পারি অনন্ত আনন্দের উৎস, যা শেষত বৃহত্তর মানবমঙ্গলের দ্বার খুলে দেয়।’ গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত লালন শাহ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে লালন সাঁই-এর দেহতত্ত্ব শিরোনামের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের বিশিষ্ট লালন গবেষক শক্তিনাথ ঝাঁ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শফি আহমেদ, আবদুল ওয়াহাব, অসীমানন্দ গঙ্গোপাধ্যায় এবং রেজাউদ্দিন স্টালিন। সভাপতিত্ব করেন পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক পবিত্র সরকার।

আলোচকবৃন্দ বলেন, ‘লালন সাঁই ভাবসাধনার রূপকে ইহজাগতিক মুক্তির কথা বলেছেন। ক্ষণিকের প্রতীকে তিনি অনন্তের গান গেয়েছেন। লালন বিশ্বাস করতেন মহাত্যাগ ব্যতীত মহামোক্ষ অসম্ভব। লালনের দেহতত্ত্বে আমরা দেখি তিনি সর্বদেহে মানবমঙ্গলের সূত্র সন্ধান করেছেন। নিম্নবর্গের ভাবালোক নানা গভীর বাণীতে ভাস্বর লালনের চিন্তা ও সৃষ্টিতে যা সুদীর্ঘ সময় পেরিয়ে আজও আমাদের কাছে সমান প্রাসঙ্গিক।’

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক পবিত্র সরকার বলেন, ‘লালন সাঁই বাংলা অঞ্চলের ভাব-রসকে বৃহত্তর মাত্রায় উন্নীত করেছেন। তার দেহতত্ত্বও একই সূত্রে আলোচনাসাপেক্ষ। লালনের দেহতত্ত্ব সংকীর্ণ শারীরবৃত্তিক পরিসর ছাপিয়ে বৃহতের বার্তা দেয়, যা জাতি সম্প্রদায় ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের কল্যাণের কথা বলে।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এপি/কেএম/সা/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৪)