অপরাধের অভিনব কৌশল
আটক এএসআইকে নিয়ে নাটক!
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নিজে সাভার মডেল থানার একজন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই)। চোরাচালানের ডলার ও স্বর্ণ নিজের আয়ত্তে আনতে ‘অফ ডিউটিতে’ সোর্স এবং সাবেক সেনা সদস্যের সহায়তায় অভিযান চালাতে গিয়ে সহযোগীসহ র্যাবের হাতে ধরা পড়লেন তিনি।
এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে সাভার মডেল থানায় ‘নিখোঁজ’ দাবি করে সাধারণ ডায়েরি করা হলো। আবার সাভার মডেল থানা ওই এএসআইয়ের আটকের বিষয়টি জানে না। এমনই নাটক করা হলো এএসআই ফাজিকুল ইসলামকে নিয়ে।
র্যাবের উত্তরা হেড কোয়ার্টার্সে শুক্রবার সাড়ে তিনটায় ব্রিফিং এবং সাভার মডেল থানা সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
র্যাবের ব্রিফিংয়ে মিডিয়া অ্যান্ড লিগাল উইংয়ের পরিচালক এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘শুক্রবার মধ্যরাতে সাভার সিটি সেন্টারের সামনে একটি অপরাধীচক্র অভিনব কৌশলে অপর অপরাধী চক্রের মালামাল হাতিয়ে নেওয়ার সময় দুই চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করে র্যাব-৪। এ সময় র্যাব-৪ এর সদস্য ক্যাপ্টেন নাহিদ গুরুতর আহত হন। নাহিদকে রাতেই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’
আটকরা হলেন- সাভার মডেল থানার এএসআই ফাজিকুল ইসলাম (৩৪), তার সহযোগী সাবেক সেনা সদস্য রেজাউল হক (৪০), সুজন শেখ (২৫), মিরান খান (৩৫) ও চোরাচালান চক্রের সদস্য সামছুল হক (৫৮)। এরপর সামছুল হকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে টাঙ্গাইল মির্জাপুরের বহুরিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সবুরকে (৫০) শনিবার দুপুর দেড়টায় আশুলিয়ার দোসাইদ বাজার থেকে আটক করা হয়। সবুর স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের মূল হোতা বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, শুক্রবার মধ্যরাতে যশোর থেকে স্বর্ণ এবং ডলারের একটি চালান সাভার আসবে এমন সংবাদ এএসআই ফাজিকুলকে দেয় সবুরের সহযোগী খোকন। এরপর এএসআই তার সহযোগীদের নিয়ে সাভার সিটি সেন্টারের সামনে অবস্থান নেন। চোরাচালান চক্রের দুই সদস্য খোকন এবং শামসুল হক ঈগল পরিবহনে ডলার ও স্বর্ণের ওই চালান নিয়ে মধ্যরাতে সিটি সেন্টারের সামনে নামে। এরপর খোকন পরিকল্পনা মতো শামসুল হককে রেখে আলাদা হয়ে যায়।
শামসুল আশুলিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি লোকাল বাসে উঠলে ফাজিকুল তার সহযোগীদের নিয়ে পুলিশের পরিচয় দিয়ে বাস থেকে নামায়। এরপর র্যাব-৪ এর একটি টিম ওই দুই চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে। এ সময় খোকন পালিয়ে যায়।তাদের কাছ থেকে দুটি পিস্তল, ১৭টি গুলি, তিনটি ছুরি, তিনটি হ্যান্ডকাপ এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
ফাজিকুলের সোর্স মীরন বলেন, ‘ফাজিকুল বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। তিনি পুলিশের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছেন। আমি সোর্সের কাজ করব না বললে তিনি আমাকে ভয় দেখাতেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা কামাল কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে তিনি সাধারণ ডায়েরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
(দ্য রিপোর্ট/এএইচএ/এনডিএস/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৪)