দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। কারবালার শোকাবহ ঘটনা ছাড়াও ইসলামের ইতিহাসে অসংখ্য তাৎপর্যময় ঘটনায় উজ্জ্বল হয়ে আছে মহররম মাসের ১০ তারিখ।

 

মুসলমানরা আশুরাকে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে পালন করে থাকে। আশুরা অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রেরণার উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।

 

হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) কারবালার ফোরাত নদীর তীরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শাহাদাত বরণ করেন।

এই শোক ও স্মৃতিকে স্মরণ করে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিশেষ মোনাজাত, দোয়া মাহফিল ও কোরআনখানি। বরকতময় এ দিনে ও একই সঙ্গে আগের বা পরের দিনে রোজা রাখা অনেক পূণ্যের কাজ।

শিয়া সম্প্রদায় আশুরার দিনটিকে বিশেষভাবে পালন করে থাকে। আশুরার দিনে পুরনো ঢাকার হোসেনী দালান থেকে বের হওয়া শিয়াদের তাজিয়া মিছিল ঐতিহ্যবাহী। এছাড়াও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিয়ারা তাজিয়া মিছিল বের করে।

ইসলামের ইতিহাসে পবিত্র আশুরার অসংখ্য তাৎপর্যময় ঘটনা উজ্জ্বল হয়ে আছে। এই দুনিয়া সৃষ্টি, হজরত আইয়ুব (আ.)-এর কঠিন পীড়া থেকে মুক্তি, হজরত ঈসা (আ.)-এর আসমানে জীবিত অবস্থায় উঠে যাওয়া, হজরত নুহ (আ.)-এর নৌকা ঝড়-তুফানের কবল থেকে মুক্তি পাওয়াসহ অসংখ্য ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে মহররমের ১০ তারিখ অবিস্মরণীয় ও মহিমান্বিত। সর্বোপরি এই পৃথিবীর মহাপ্রলয় বা রোজ কিয়ামত মহররমের ১০ তারিখে ঘটবে বলে মুসলমানদের বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আলাদা বাণী দিয়েছেন।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ নিবন্ধন প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতার পবিত্র আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাণীতে বলেছেন, ‘পবিত্র আশুরা সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য এক তাৎপর্যময় ও শোকের দিন। কারবালার শোকাবহ ঘটনার স্মৃতিতে ভাস্বর পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী আমাদেরকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে উদ্বুদ্ধ করে, প্রেরণা যোগায় সত্য ও সুন্দরের পথে চলার। পবিত্র আশুরার মহান শিক্ষা আমাদের সকলের জীবনে প্রতিফলিত হোক-এ প্রত্যাশা করি।’

ইসলাম শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম, এখানে হানাহানি, হিংসা, দ্বেষ বা বিভেদের কোন স্থান নেই জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘পবিত্র আশুরার এই দিনে আমি সাম্য, ন্যায়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করি।’

প্রধানমন্ত্রীর বাণী শেখ হাসিনা বাণীতে বলেন, ‘সব অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে আমাদের জাতীয় জীবনে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আশুরার মহান শিক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এমকে/অক্টোবর ১২, ২০১৬)