উপজেলা নির্বাচন
বিদ্রোহী প্রার্থীদের ‘বশে’ আনতে পারছে না আ’লীগ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : উপজেলা নির্বাচনে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগ। শেষ মুহূর্তে এ সব বিদ্রোহী প্রার্থীকে বশে আনতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। সবচেয়ে বড় ‘অস্ত্র’টি হচ্ছে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিষ্কারাদেশ। এ ছাড়া রয়েছে হুমকি-ধমকি ও চাপ। কিন্তু অনেক উপজেলায় ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা পাত্তাই দিচ্ছে না দলের এ সব উদ্যোগকে।
কোনো কোনো উপজেলার প্রার্থীরা বশে আসছেন। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। তাই রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, যে সব উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী বহাল থাকছে সেখানে দল সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী নাও হতে পারেন।
একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের গঠণতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া কাউকে বহিষ্কার করতে পারে না জেলা কমিটি। এ ছাড়া উপজেলা স্থানীয় নির্বাচন। এখানে যে কারও নির্বাচন করার অধিকার আছে। তা ছাড়া সদ্য জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের অনেক বিদ্রোহী প্রার্থীর বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত দল কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। তাই উপজেলা নির্বাচনেও শেষ পর্যন্ত তাদের ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে না।
গঠনতন্ত্রের ৪৬ এর (ছ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘প্রতিষ্ঠানের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিবার ক্ষমতা কেবল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের থাকিবে। তবে এ ক্ষেত্রে ধারা ১৭(চ) এর ব্যত্যয় ঘটিবে না। ১৭ (চ) ধারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদ কর্তৃক গৃহীত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আপিল বিবেচনা ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজবাড়ী জেলার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী খলিলুর রহমান বলেন, ‘দল এ উপজেলায় মনোনয়ন দিয়েছে আবুল কালাম আজাদকে। আর আমাকে বহিষ্কার করেছে। এ বহিষ্কারাদেশ সম্পূর্ণ বেআইনি।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে দলের কোনো ভূমিকা থাকার কথা নয়।’
গোপালগঞ্জ উপজেলার বিদ্রোহী প্রার্থী কাবিল মিয়া বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনেও বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল। তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
এদিকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও স্বীকার করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ পুরোপুরি বৈধ নয়। এখানে আইনি জটিলতা রয়েছে। তা ছাড়া কোথাও কোথাও বহিষ্কারের ঘটনাও নিয়মানুযায়ী হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে আমরা সমস্যায় পড়ে গেছি। এখানে গঠনতন্ত্র ও আইনি জটিলতা রয়েছে। নিয়মানুযায়ী না হওয়ায় কেন্দ্রীয় অনেক নির্দেশ অমান্য করছে তৃণমূল নেতারা। এখানে আমাদের কিছু করার থাকছে না।
(দ্য রিপোর্ট/এসবি/এনআই/এইচএসএম/এএল/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৪)