দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : গৃহকর্মী সুরক্ষা নীতিমালা চূড়ান্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অফিস করে রবিবার এ নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, গৃহকর্মীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী গৃহকর্মীদের জন্য নীতিমালা চূড়ান্ত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সকল গৃহকর্মীদের আমরা এ নীতিমালার আওতায় আনব। নীতিমালা অনুযায়ী গৃহকর্মীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ে ও বেতনে কাজ করবে। নীতিমালায় আচরণের বিষয়টিও নিয়ে আসা হবে। নীতিমালার বাইরে গৃহকর্মীদের সঙ্গে আচরণ করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গৃহকর্মীরা যাতে শ্রমিক হিসেবে অধিকার পায় তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

কয়েক বছর আগে এ নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করা হলেও তা চূড়ান্ত করা হয়নি। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, প্রয়োজনীয় সংশোধনের মাধ্যমে ওই নীতিমালাটিই এখন চূড়ান্ত করা হবে।

শ্রম আইন বাস্তবায়নে বিধিমালা আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সভায় চূড়ান্ত করা হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে মুজিবুল হক বলেন, শ্রম পরিদফতরের আওতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র আছে। এর অনেকগুলো অবহেলা-অযত্নে রয়েছে, কোনো কোনোটি বেহাত হওয়ার অবস্থায় আছে। আমরা এ সব কেন্দ্র আরও প্রশিক্ষণ উপযোগী ও একইসঙ্গে হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সর্বনিম্ন সুদে ঋণ নিয়ে এ সব স্থানে তোমরা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ডরমেটরি করার জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করতে পার।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম থেকে শিশু সরিয়ে এনে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ করে তোলা হবে। এ জন্য ২৩ জেলায় কারখানা পরিদর্শন পরিদফতর অফিস ও কল্যাণ কেন্দ্রে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী এতে সম্মতি দিয়েছেন।

পোশাক খাতের শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে জানিয়ে চুন্নু বলেন, চট্টগ্রাম ও ঈশ্বরদী ইপিজেডে (রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) ডরমেটরি নির্মাণ করে আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) এর সহযোগিতায় বৃহত্তর রংপুরের ৪ জেলার সাড়ে ১৪ হাজার নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পরবর্তীকারে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ব্যাপক পরিসরে করা হবে। প্রধানমন্ত্রী এতে সমর্থন দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বস্তিতে থাকা লাখ লাখ মানুষ নাগরিক অধিকার বঞ্চিত। বড় বড় ভবন নির্মাণ করে সর্বনিম্ন ব্যয়ে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করারও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হলেও তাদের মূল সমস্যা বাসা ভাড়া। বাসা ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করা হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

জিএসপি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে জিএসপি ফিরে পেতে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে কারখানা পরিদর্শক নিয়োগ ছিল অন্যতম। আমরা ইতোমধ্যে ২৪২ জন পরির্শক নিয়োগ করেছি। আগামী মার্চের মধ্যে আরও ২০০ পরিদর্শক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।

৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ পোশাক কারখানা ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা বাস্তবায়ন করেনি তাদের ডেকেছিলাম। ছোট ছোট ও সাব-কন্ট্রাটে কাজ করা কারখানাগুলো বাস্তবায়ন করছে না। নূন্যতম মজুরি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে কিছুটা সময় লাগবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এসবি/সা/ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৪)