দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ভ্রাম্যমাণ আদালতে স্কুল ছাত্র সাব্বির শিকদারকে ‘আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূতভাবে’ দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ায় টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকসুদুল আলমকে ঢাকা বিভাগের বাইরে বদলির হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার বিচারপতি।

ইউএনও ও ওসির আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার (২৬ অক্টোবর) চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী হাইকোর্টের আদেশ চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। শিক্ষার্থী সাব্বির শিকদারকে দেওয়া খালাসের আদেশ বহাল রাখা হয়েছে। আদালতে ইউএনওর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও ওসির পক্ষে নুরুল ইসলাম সুজন এমপি শুনানি করেন।

এর আগে গত ১৮ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই শিক্ষার্থীর আদালতে দেওয়া বক্তব্য অভিযোগ হিসেবে গ্রহণ করে টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশও দেন। তদন্তের সুবিধার্থে ইউএনও ও ‍ওসিকে প্রত্যাহার করে ঢাকা বিভাগের বাইরে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্থানীয় সংসদ সদস্য অনুপম শাজাহান জয়ের ব্যাপারে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালনকারী ইউএনও স্থানীয় স্কুল শিক্ষার্থী সাব্বির শিকদারকে এই দণ্ড দেন। এ সংক্রান্ত ২০ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টাঙ্গাইল-৮ বাসাইল-সখিপুর আসনের সংসদ সদস্য অনুপম শাজাহান জয়কে নিয়ে ‘অবমাননাকর’ বক্তব্য দেওয়ায় ওই বালকের বিরুদ্ধে তিনি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর গত ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএনও রফিকুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। সাব্বিবর টাঙ্গাইলের সখিপুরে প্রতীমা বঙ্কি পাবলিক হাই স্কুলের শিক্ষার্থী ও প্রতিমা বঙ্কি গ্রামের বাসিন্দা শাহিনুর আলমের ছেলে। দণ্ডের পর ১৯ সেপ্টেম্বর ওই বালককে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের কপি ‍আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতের নজরে আনেন। এরপর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ইউএনও ও ওসিকে ২৭ সেপ্টেম্বর উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেন। ওইদিনই কারাদণ্ডপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষার্থীকে আদালত জামিনে মুক্তির নির্দেশও দেন।

২৭ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত দিনে ইউএনও ও ওসি দণ্ড প্রদানের বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা দেন। অপরদিকে স্কুল ছাত্র নিজের ওপর করা নির্যাতনের বর্ণনা দেন। শুনানি শেষে আদালত ১৮ অক্টোবর ওই ছাত্রের সাজা বাতিল করে ইউএনও এবং ‍ওসিকে প্রত্যাহার করে ঢাকার বাইরে অন্যত্র সংযুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এআরই/অক্টোবর ২৬, ২০১৬)