মতিনুজ্জামান মিটু, দ্য রিপোর্ট : বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ব্রি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সর্বমোট ৭ হাজার ৯ শ’ ৫ দশমিক ১৪ লাখ টাকা বাজেট বরাদ্দ পেয়েছে। ব্রি’র বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা ২০১২-১৩ তে সংস্থাটির পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন বিভাগের প্রতিবেদনে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিবেদনে ব্রি’র পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন বিভাগের প্রধান ম. মুনিরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ২০১২-১৩ অর্থবছরে সংস্থাটি সর্বমোট বাজেট বরাদ্দ পেয়েছিল ৭ হাজার ৯ শ’ ৫৬ দশমিক ৬৬ লাখ টাকা। যার মধ্যে ব্যয় বা অগ্রগতি হয়েছিল শতকরা ৯৩ দশমিক ৫৯ ভাগ। অর্থাৎ ৭ হাজার ৪ শ’ ৪৬ দশমিক ৩৩ লাখ টাকা। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১১-১২ অর্থবছরে ব্যয় বা অগ্রগতি হয় শতকরা ৯৭ দশমিক ৩৬ ভাগ।

২০১৩-১৪ বছরে সর্বমোট বাজেটের মধ্যে রাজস্ব বাজেট ৩ হাজার ৮ শ’ ১৪ দশমিক ৬৪ লাখ টাকা, উন্নয়ন বাজেট বা প্রকল্প বরাদ্দ ৩ হাজার ২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং রাজস্ব বা অনুন্নয়ন বাজেটে মোট উন্নয়ন বাজেট ৮ শ’ ৪২ দশমিক ৫০ লাখ টাকার বরাদ্দ রয়েছে।

রাজস্ব বাজেটে বেতন ভাতাদি, গবেষণা, মুলধনসহ মোট সাহায্য মঞ্জুরি ৩ হাজার ৬ শ’ ৭২ দশমিক ৬৪ লাখ টাকা ও নিজস্ব আয় ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

উন্নয়ন বাজেট বা প্রকল্প বরাদ্দ করা হয়েছে, কৃষি যন্ত্রপাতি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প (ব্রি অংগ) কোটি টাকা, ধান ফসলের পার্থক্য কমানো (ব্রি অংগ) ২৪ লাখ টাকা, মান সম্পন্ন বীজ সরবরাহ বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প (ব্রি অংগ-আইডিবি ফান্ডের প্রকল্প) ২ হাজার ৯৮ লাখ টাকা, মুজিবনগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প (ব্রি অংগ) ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ইন্টিগ্রেটেড এগ্রিকালচারাল প্রোডাকটিভিটি প্রজেক্ট ৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ও পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প বাবদ ১ কোটি টাকা।

রাজস্ব বা অনুন্নয়ন বাজেটের উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ রয়েছে, ব্রি’র আবাসিক ভবনসমূহের সংস্কার ও মেরামত ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা, ব্রি’র গবেষণা মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসন ও আঞ্চলিক কার্যালয়, কুমিল্লার গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ কর্মসূচি ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং ব্রি’র অধীনে বায়োটেকনোলজি গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ কর্মসূচি বাবদ ৪৭ দশমিক ৫০ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউিটের আয় ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্রিসহ সকল স্বায়ত্তশাসিত সরকারি সংস্থার আয়ের উৎস হল সরকারের নিজস্ব আয়। রাষ্ট্রের বাজেটের সরকারি মঞ্জুরি বা সহায়তা এবং উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসূচিসমূহের বরাদ্দের সমষ্টি। এই পরিপ্রেক্ষিতে যে বিভিন্ন কার্যক্রম করা হয় তা সংস্থার ব্যয়।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন- জাতিসংঘের মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল এমজিডি’র গোলস, টার্গেটস এবং ইন্ডিকেটরস, ষষ্ট পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, জাতীয় কৃষিনীতি, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার, মেয়াদী বাজেট কাঠামো (এমটিবিএফ) এবং নিজ প্রতিষ্ঠানের ম্যান্ডেট বাজেট প্রণয়নে বিবেচনা করা হয়।

অনুন্নয়ন খাতে উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটে শুরু থেকে উন্নয়ন প্রকল্প বরাদ্দের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণয়ন করা হত। বিগত ২০০৩-০৪ অর্থবছর থেকে সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/ প্রতিষ্ঠানের কিছু রাজস্ব ব্যয় সর্বস্ব প্রকল্পের কার্যক্রম বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাস্তবায়ন না করে রাজস্ব বাজেটের আওতায় নির্বাহের জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

কর্মশালায় এভাবে প্রতিবেদন উপস্থাপনের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে এ সংক্রান্ত সঠিক ধারণা সৃষ্টির জন্য মহাপরিচালকের নির্দেশে এই প্রথম পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন বিভাগ কর্মশালায় প্রতিবেদন উপস্থাপন করল।

পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন বিভাগে ৬ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছে। প্রতিবেদন প্রস্তুতিতে ব্রি’র অর্থ ও হিসাব বিভাগ তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে বলে জানান তিনি।

বাজেটের ওপর আলোচনায় ব্রি’র মহাপরিচালক ড. জীবন কৃঞ্চ বিশ্বাস বলেন, ব্রি’র ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের জন্য বাজেটের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে দেশের কৃষিবিজ্ঞানীরা আন্তরিকতার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করে যাবে।

গাজিপুরের জয়দেবপুরে ব্রি মিলনায়তনে ৫ দিনের কর্মশালাটি বৃহস্পতিবার শেষ হয়। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ৯ ফেব্রুয়ারি কর্মশালার উদ্বোধন করেন। কর্মশালায় ব্রি’র ১৮টি বিভাগ ও ৯টি আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। কর্মশালাটি প্রতিবছর অক্টোবরে হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে তা হয়নি। আগামীতে অক্টোবরেই কর্মশালা অনুষ্ঠানের ব্যাপারে মহাপরিচালক গুরুত্ব আরোপ করেন।

(দ্য রিপোর্ট/এম/এসবি/সা/ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৪)