`কূটনীতিক শিষ্টাচার মেনে চলুন’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিদেশি কূটনীতিকদের শিষ্টাচার মেনে চলাফেরার করার তাগিদ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। কূটনীতিক শিষ্টাচার মেনে না চললে সরকার কঠোর হতেও বাধ্য হবেন বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
রবিবার দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে শেখ সেলিম এই হুঁশিয়ারি দেন।
সেলিম বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর কিছু বিদেশি কূটনীতিক বলছেন, আবার নির্বাচন দিতে হবে। কিসের নির্বাচন? নির্বাচন তো হয়েছে পাঁচ বছরের জন্য। এ সব তথাকথিত কূটনীতিক বলে জামায়াত নাকি মডারেট ইসলামিক দল। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই আপনাদের চলাচল সীমিত। নির্বাচনের পর এমন কী যে একজন নেত্রীর সঙ্গে আপনার ৪ বার দেখা করতে হয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না। ’৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আপনাদের ষড়যন্ত্র ৭১ সালে সফল হয়নি এখনও হবে না।’
শেখ সেলিম বলেন, ‘যাদের আজ মডারেট ইসলামিক দল বলছেন, এ সব জঙ্গি তালেবান সংগঠন আপনাদের টুইন টাওয়ারে যখন হামলা করেছিল তখন আমরাও সহানুভূতি প্রকাশ করেছিলাম। তাই বলব এদের পক্ষ ছেড়ে দিন।’
পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্যের শুরুতে শেখ সেলিম বাংলাদেশে জিহাদ ঘোষণা করে আল কায়দা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি ভিডিও বার্তার সমালোচনা করে তার নিন্দা জানান।
শেখ সেলিম বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জাওয়াহিরির দেওয়া ভিডিও বার্তাটির মেসেজ আর জামায়াতের মেসেজের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। জামায়াতের কথা জাওয়াহিরির বার্তায় প্রতিফলন ঘটেছে। জাওয়াহিরি যা বলেছেন, তা বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া এবং তার দলের নেতাদের কথা সঙ্গে মিলে যায়।’
সেলিম বলেন, ‘বিএনপি জামায়াত তালেবান আল কায়েদাদের দোসর। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, বাংলাদেশ নাকি ৫৪ হাজার বর্গ মাইলের কারাগার। জাওয়াহিরিও একই কথা বলেছেন। খালেদা জিয়া বলেছেন, বাংলাদেশে মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে, গণহত্যা হচ্ছে। জাওয়াহিরিও তার ভিডিও বার্তায় একই কথা বলেছেন। এতে প্রমাণিত হয় খালেদা জিয়া জাওয়াহিরির কাছে এ সব মেসেজ পাঠিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগের এই পার্লামেন্টেরিয়ান বলেন, ‘বিএনপি জামায়াত যেমন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিরোধিতা করছে, তেমনি জাওয়াহিরি আমাদের এই ট্রাইব্যুনালের বিরোধিতা করেছে। তিনি বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে নাকি ইসলাম ধ্বংসের কাজ করছে সরকার।’
শেখ সেলিম বলেন, ‘জাওয়াহিরি শুধু বাংলাদেশের জঙ্গিবাদকে উস্কে দেননি। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়েও কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতার মাধ্যমে নাকি ভারতে ষড়যন্ত্রে পাকিস্তান থেকে আলাদা করে ইসলামকে ধ্বংস করা হয়েছে।’
সেলিম বলেন, ‘আমি তাকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, বাংলাদেশ কোনো সাম্প্রদায়িক দেশ নয়। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ। আর ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম সৃষ্টি করে, ধ্বংস করে না। আর জামায়াত, তালেবান ইসলামকে জঙ্গি ধর্ম হিসেবে পরিচিত করতে চাই। জঙ্গিরা ধ্বংস করতে পারে, মানুষকে হত্যা করতে পারে। তারা যখন আমেরিকায় জিহাদের ঘোষণা দিয়েছিল তখন আমেরিকার শান্তিপ্রিয় মানুষের ওপর হামলা হয়েছে।’
(দ্য রিপোর্ট/আরএইচ-এইচআর/এসবি/সা/ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৪)