আল কায়েদার জিহাদের ডাক
‘শঙ্কা থাকলেও নির্ভীক সরকার’
আমানউল্লাহ আমান, দ্য রিপোর্ট : ‘ম্যাসাকার বিহাইন্ড এ ওয়াল অব সাইলেন্স’ শিরোনামে এক অডিও বার্তায় বাংলাদেশে জিহাদের ডাক দিয়েছে আল কায়েদার বর্তমান নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি। বার্তাটি শনিবার দুপুর থেকেই দেশের গণমাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি চোখ এড়ায় না সরকারের নীতি নির্ধারকদেরও।
সরকারের কয়েকজন সিনিয়র ও দায়িত্বশীল মন্ত্রীর সঙ্গে জাওয়াহিরির বার্তা প্রসঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে সরকারের মধ্যে শঙ্কা আছে, উদ্বেগ আছে তবে কোনো ভয় নেই। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে ধর্মান্ধতার সুযোগ নিয়ে খুব বেশি কিছু করার সুযোগ রয়েছে বলে তারা মনে করছেন না। এ ছাড়া সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের শক্ত অবস্থান বিশ্বে স্বীকৃত, তাই এ ধরনের হুমকি মোকাবিলা করতে আত্মবিশ্বাসী সরকার।
সরকারি নীতি নির্ধারকরা জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগ থেকেই নির্বাচনবিরোধী পক্ষ দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র করে আসছিল। এটিও সেই ষড়যন্ত্রের একটি বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তবে সরকার সব সময়ই এ বিষয়ে সজাগ এবং সতর্ক। ইতোমধ্যে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোয় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখন বাকি স্থানগুলোতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে সরকার কঠোর ভূমিকা অব্যাহত রাখবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘ধর্মান্ধরা এগুলো করে থাকে- এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের আবহমানকালের ইতিহাসে দেখা যায়, ধর্মান্ধ গোষ্ঠী কোনোদিনই এ বাংলায় খুব বেশি কিছু করতে পারেনি। কারণ আমাদের দেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক। আল কায়েদার এ ‘জিহাদের ডাকে’ আমাদের মধ্যে শঙ্কা আছে, উদ্বেগ আছে কিন্তু কোনো ভয় নেই। আমরা সতর্ক থাকব।’
একই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘অস্ত্রের ঝনঝনানির মধ্যে শেখ হাসিনার সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে। এ রকম বহু ঘটনা অতিক্রম করে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আজকে আমরা এখানে এসেছি।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে অনেকে খেলতে চায়। তবে যতই ঝড়-ঝঞ্ঝা-বিপদ আসুক, আমরা তা ভেদ করে এগিয়ে যাব।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘অডিও বার্তাটি সঠিক কিনা- তা জানতে দুয়েকদিন সময় লাগবে। বার্তাটি সঠিক কিনা-সেটা আমরা আর্ন্তজাতিক এক্সপার্টদের দিয়ে পরীক্ষা করে জানতে পারব। গত ৫ বছরে সন্ত্রাসের বিপক্ষে বাংলাদেশের যে ভূমিকা তার ফলে দেশীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নির্মূল হয়েছে। এখন আর্ন্তজাতিক কোনো উগ্রবাদী গোষ্ঠী যদি এ দেশে থেকে থাকে তাহলে সেটাকেও আমরা নির্মূল করতে পারব, সে আত্মবিশ্বাস আমাদের আছে।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘বার্তাটি যদি সঠিক হয় তাহলে বুঝব, বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতের সঙ্গে আর্ন্তজাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর যে যোগাযোগ আছে এটিই তার প্রমাণ। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে নির্বাচন পরবর্তী শুনানিতে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নিষিদ্ধে একটি প্রস্তাব পাস হয়। অডিও বার্তা যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে ওই প্রস্তাবের পক্ষের দাবি আরও জোরালো হবে।’
(দ্য রিপোর্ট/এইউএ/এনডিএস/এএল/ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৪)