কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন ১৯৬২ সালের ২২ নভেম্বর যশোরের নলভাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবেই কবিতায় হাতেখড়ি। প্রথম কবিতা ‘শপথ’। ছাপা হয় শতদল পত্রিকায় ১৯৭০ সালে। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৩০টির অধিক। উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ‘ফিরিনি অবাধ্য আমি’, ‘আর্শীবাদ করি আমার দুঃসময়কে’, ‘আঙ্গুলের জন্য দ্বৈরথ’, ‘হিংস্রনৈশ্যভোজ’, ‘সব জন্মে শত্রু ছিল যে’ ইত্যাদি। প্রবন্ধ গ্রন্থ ১টি- ‘রবীন্দ্রনাথ আরোগ্য’। ছড়া গ্রন্থ ‘হাঁটতে থাকো’। উপন্যাস ‘সম্পর্কেরাভাঙ্গা’। কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৫ সালে তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান। দ্য রিপোর্টের পক্ষ থেকে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আদিত্য রুপু

এবারের মেলায় কী কী বই আসছে? কোন প্রকাশনী বের করছে?

এবারের মেলায় আমার লেখা প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৬টি। এরমধ্যে কাব্যগ্রন্থ ‘ও প্রভু ওম শান্তি নেই’ প্রকাশ করেছে এশিয়া পাবলিকেশন্স। ‘শৈশব’ নামের কিশোর কাব্যের বই প্রকাশ করেছে রাঁচী গ্রন্থনিকেতন। রাইটার্স গিল্ড থেকে বেরিয়েছে নিবন্ধ সংকলন ‘ডাকঘর’। একটি ব্যতিক্রমী পত্রোউপন্যাস ‘প্রিয়তমাসু- কুড়িটি প্রেমের চিঠি’- প্রকাশ করেছে রাঁচী গ্রন্থনিকেতন। আর ‘রবীন্দ্রনাথ আরোগ্য’ প্রবন্ধ গ্রন্থটি পুনর্মুদ্রণ করেছে কবি প্রকাশনী। ‘হেরাক্লিটাসের নদী’ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেছে সিদ্দিকীয়া পাবলিকেশন্স।

নতুন বইগুলো সম্পর্কে বলুন?

খুবই আপ্লুত হই যখন নতুন প্রচ্ছদে শোভিত একটি গ্রন্থ প্রকাশ পেতে দেখি। একজন লেখকের সবচে’ আনন্দের বিষয় হল তার বই প্রকাশ। আমি বছরের শুরু থেকেই প্রস্তুতি নিতে থাকি নতুন বইয়ের- এ এক অনুশাসন লেখকের জন্যে। এ হচ্ছে লেখক জীবন বিন্যাসের ধারাবাহিকতা। যত দিন যাচ্ছে বইয়ের প্রতি আমার আকর্ষণ আরও বাড়ছে।

বইকে কীভাবে প্রান্তিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া যায় বলে মনে করেন।

বইকে প্রান্তিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে প্রয়োজন সরকার-প্রকাশক-লেখক-পাঠকদের যৌথ ভূমিকা। সরকারের একার পক্ষে এই কাজ সমাধা করা অসম্ভব। সরকার উদ্যোগ নিলে প্রকাশকদের সদিচ্ছা ও লেখকদের আন্তরিকতা দিয়ে জেলা পর্যায়ে নিয়মিত বইমেলা করা সম্ভব। পাঠকদেরও বই পড়ার অভ্যাস বাড়াতে হবে।

বই কেনার পরিকল্পনা নিয়ে বলুন।

প্রতিবছর বইমেলা থেকে বই কিনি আমি। খুব বেশি পরিকল্পনা করে বই কেনা হয় না। তবে অন্যান্যবারের মতো এবারও বেশকিছু অনুবাদগ্রন্থ ও ভালো কবিতার বই কিনব আমি। এ ছাড়াও পছন্দ হলে নতুন লেখক-কবিদের কিছু বই কেনার ইচ্ছে আছে।

বইমেলার স্থান সম্প্রসারণের বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

সময়ের প্রয়োজনে বইমেলাকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। তবে আমার মতে, দুই মেলার সংযোগসেতুটি নেই এখন। মেলার এই বিভাজনকে দূর করতে দুই খণ্ডের সংঘবদ্ধতার প্রয়োজন। ভবিষ্যতে এই উদ্যোগ নেওয়া হলে মেলার গুরুত্ব ও চেতনা সমুন্নত থাকবে।

নতুন কী লিখছেন

এবার আমার গ্রন্থের মধ্যে ‘প্রিয়তমাষু, কুড়িটি প্রেমের চিঠি’ বেশ সাড়া ফেলেছে। এখন চিঠি লেখার চল নেই। কিন্তু চিঠির একটা ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যিক মূল্য আছে। মাইকেল, গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ, শামসুর রাহমান কিংবা রিলকে গ্যেটে আরও বড় মনীষীদের চিঠিপত্র না থাকলে আমরা তাদের জীবনইতিহাস জানতে পারতাম না। এই মূল্যবোধ থেকেই চিঠি লেখা। বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ কিছু রোমান্টিক প্রিয় নাম উপজীব্য করে এই চিঠির সৃষ্টি। এখন লিখছি ‘প্রিয়তমাসু, কুড়িটি বিরহের চিঠি’।

(দ্য রিপোর্ট/এআর/এইচএসএম/এনআই/ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৪)