দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : সম্প্রতি একটি পর্যবেক্ষণে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, অন্যান্য বছরের শীতের চেয়ে এ বারের শীতে অনেক বেশি উত্তপ্ত উত্তর মেরু।

ন্যাশন্যাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নোয়া) আলাস্কা অঞ্চলের ক্লাইমেট সায়েন্স অ্যান্ড সার্ভিস ম্যানেজার রিক থোমান জানিয়েছেন, অক্টোবর থেকে আলাস্কার নর্থ স্লোপে তাপমাত্রা এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সুমেরু গবেষক জ্যাক ল্যাবে সম্প্রতি টুইট করে সুমেরু সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সংবাদটি জানিয়েছিলেন।

ড্যানিশ মেটেরোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট (ডিএমআই) জানাচ্ছে, স্বাভাবিকের থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়েছে উত্তর সাগরে।

নিউ জার্সির রটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সুমেরু বিশেষজ্ঞ জেনিফার ফ্রান্সিস জানাচ্ছেন, সুমেরু সাগরে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অর্থাৎ ৩৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য সাগরের উপরের জমাট বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে। ফলে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়ছে।

বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চিন্তিত অসংখ্য মানুষ।

বিজ্ঞানীদের দাবি, এই উষ্ণায়নের ফলে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে প্রাণিকুলের বিভিন্ন প্রজাতি।

পরিবেশবিদরা বলছেন, দূষণের ফলে কার্বন নির্গমন বাড়ছে। তার জেরেই বাড়ছে বিশ্বের গড় উষ্ণতা। ফলে ছন্দপতন ঘটছে আবহাওয়ার স্বাভাবিক নিয়মে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, যত দিন যাবে, ততই বাড়বে পৃথিবীর উষ্ণতা।

নাসার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, প্রতি দশ বছরে ১৩.৩ শতাংশ হারে সুমেরু মহাসাগরের বরফ গলে যাচ্ছে। ফলে সারা বিশ্বের বাস্তুতন্ত্রের উপরই তার কু-প্রভাব পড়ছে।

নাসার স্যাটেলাইট রেকর্ডে ধরা পড়েছে, ২০১২ সালে সুমেরু সাগরে বরফের ব্যপ্তি ছিল সবচেয়ে কম। কিন্তু এ বার সেই রেকর্ডও ভেঙে যেতে পারে।

অন্যান্য বছর শীতকালে সুমেরু মহাসাগরে তাপমাত্র যেমন তাকে, এ বার তাপমাত্রা তার চেয়ে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেসি হওয়া যথেষ্ট অস্বাভাবিক, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শীতকাল কাটলে তাপমাত্রা আরও বাড়বে। ফলে বরফের আস্তরণ আরও সঙ্কুচিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।

অন্যান্য বছরে অপেক্ষাকৃত গরম মরশুমে বরফের চাদর যতটা গলে, শীতের মরশুমে সে ক্ষতি পূরণ করে সুমরেরু বরফ তার ব্যপ্তি বাড়িয়ে নেয়। কিন্তু এ বছর শীতের মরশুমে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেশি থাকায়, বরফের চাদর কত দূর ছড়াবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। পরের মরশুমে আবহাওয়া অপেক্ষাকৃত একটু গরম হলেই বরফের আস্তরণ আরও পিছু হঠতে থাকবে।

(দ্য রিপোর্ট/এফএস/এআরই/এনআই/নভেম্বর ২১, ২০১৬)