সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে মিলল প্রাচীন গ্রিক মূর্তি
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : গাজায় মাছ ধরতে গিয়ে সমুদ্র থেকে প্রাচীন গ্রিক দেবতা অ্যাপোলোর ভাস্কর্য পেয়েছেন এক জেলে। প্রমাণ আকারের ব্রোঞ্জের এই মূর্তিটি প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো বলে মনে করছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।
জোদাত আবু গার্ব নামের ওই জেলে গত গ্রীষ্মে সমুদ্রে মাছ ধরতে নামলে তার পায়ে শক্ত কিছু একটার স্পর্শ অনুভব করেন। প্রথমে এটিকে মৃতদেহ ভেবে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর এটি আসলে কী তা বোঝার জন্য পানির নিচে ডুব দেন গার্ব। জিনিসটি কী তারপরও ঠিক বুঝতে না পেরে অন্য কারও সাহায্য নিতে পানির উপরে উঠে আসেন তিনি।
এরপরে গার্ব তার পরিবারের সদস্য ও অন্য লোকজনকে নিয়ে পাক্কা চার ঘণ্টা চেষ্টার পর উদ্ধার করেন গ্রিক দেবতার এই ভাস্কর্য। কিন্তু এত কষ্ট করে উদ্ধার হওয়া মূর্তি মোটেও খুশি করতে পারেনি তাকে।
সমুদ্র থেকে পাওয়া প্রায় অর্ধেক টন ওজনের এই মূর্তিটি সোনার তৈরি বলেই মনে করেছিল গার্ব। তাই ধনী হবার আশায় লুকিয়ে রাখতে মূর্তিটি বাড়িতে নিয়ে যান তিনি।
এ সময়ই অন্যরা এসে ভাগ বসায় গার্বের খুঁজে পাওয়া গুপ্তধনে।
স্থানীয় একটি সশস্ত্র বাহিনী ভাস্কর্যটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। বিক্রির জন্য অনলাইন নিলাম বাজারে কেউ একজন এর নামও দিয়ে দিয়েছে। নিলামের শুরুতে প্রায় পাঁচ লাখ ডলার দাম হাঁকা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আর এই নিলামের ডাক দেখেই নড়েচড়ে বসে ফিলিস্তিনি ইসলামী গোষ্ঠী হামাস সরকারের পর্যটন ও পুরাকীর্তি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
গাজায় খুঁজে পাওয়া ঐতিহাসিক ভাস্কর্য শিল্পটি হাতে পেলেও আপাতত জনসাধারণের আড়ালে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভাস্কর্য উদ্ধারের আইনি বিষয়টি দেখছে আর পুরাতত্ত্ব বিভাগ ভাস্কর্যটির তদারকি করছে বলেও জানানো হয়েছে।
কিন্তু ভাস্কর্যটির ভিডিও দেখিয়ে এক ব্যক্তি দাবি করেছেন ভাস্কর্যটি তার কাছে নিরাপদেই আছে। কেউ কিনতে চাইলে তারও ব্যবস্থা করা সম্ভব বলে জানান তিনি।
সরকারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে কিছুতেই এই ভাস্কর্যটি বিক্রি করা হবে না। এর উদ্ধারের বিষয়ে যে তদন্ত চলছে তা শেষ হলেই মূর্তিটি জনসাধারণকে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।
পুরাতত্ত্ব বিভাগের প্রধান আহমেদ আল-বুর্জ সিএনএনকে বলেন, ‘গাজা ও ফিলিস্তিন এলাকায় পাওয়া কোনো শিল্প বিক্রি করা বেআইনি ও আইনত দণ্ডনীয়’। তিনি আরও জানান ‘আমরা অস্বীকার করছি না যে দৈবক্রমে ভাস্কর্যটি সমুদ্র থেকে পাওয়া গেছে। এটাই সত্য ঘটনা। তবে আমরা চাইছি ভাস্কর্যটি অদূর ভবিষ্যতে জনসাধারণকে দেখানোর জন্যে সংরক্ষণ করতে।’
বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক জাদুঘরগুলোর মাধ্যমে এই ভাস্কর্যটি প্রদর্শনীর পরিকল্পনায় পুরাতত্ত্ব বিভাগ কাজ করছে বলেও জানান আল-বুর্জ।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভার জাদুঘর কর্তৃপক্ষ ভাস্কর্যটি মেরামত ও সংরক্ষণে সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়েছে। আর এরপরেই এটি গাজায় জনসাধারণকে দেখানোর ব্যবস্থা করা হবে। (সূত্র : সিএনএন)
(দ্য রিপোর্ট/আরজে/এমডি/সা/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৪)