ঈশ্বর নন্দী লেইন

সুকান্তের বাসায় যাই না কতোদিন
ঈশ্বর নন্দী লেইনের শেষে সবুজ শোভিত দোতলায়
শহরে একটুখানি গ্রাম যেন ঢুকে গেছে এখানে
ঘণ্টির অবিরত শব্দে জাগে নরম সকাল
ধূপধুনোর গন্ধে পাখিরা গেয়ে ওঠে গান
পুষ্পবিল্লপত্র শোভিত সংসারে
ঈশ্বরের ঘুম ভাঙে অরূপ সূর্যের শুভ্রতায়
সুকান্ত কখনো কি জেনেছে ঈশ্বর নন্দী কই?

ঈশ্বর নন্দী কখনো কি প্রীতিলতার সতীর্থ ছিল?
সে কথা জানে না কেউ
সুকান্তকেও জিজ্ঞেস করিনি কখনো
অথচ ভগবানের ভোগে অথবা
অন্নকূটের সহস্র নিরামিষ ব্যঞ্জনে
পুরো বাসা হয়ে উঠতো প্রার্থনালয়
বুঝিনি কতোটা আশির্বাদ দিয়েছিল ঈশ্বর!

ভার্সিটির বিক্ষিপ্ত সময়ে সুকান্ত ছিল বহুরৈখিক চিন্তার সরোবর
ক্রমশ ডুবে গেছি গণিতের অভেদ্য থিয়োরি আর সল্যুশনে
রামায়ণ-মহাভারত-পুরাণের জ্ঞানগর্ভ আলো ছিল চোখে তার
ত্রিকালের সহস্র প্রশ্নের অন্বয়ের ভেতর
কখনো আসেনি ঈশ্বর নন্দীর কথা
তখনো পড়িনি মার্কসবাদ
পড়িনি পথের দাবী অথবা শেষ প্রশ্ন
শুধু উচ্ছ্বল রমণীর ছলনায় কেটেছে কবোষ্ণ কাল।
সবেমাত্র দ্বিতীয়বার পড়ে শেষ করেছি শেষের কবিতা
তখনো কাটেনি তেমন প্রেম ও বিচ্ছেদের রহস্য।

ঈশ্বর নন্দীকে একাত্তরের পর আর কেউ দেখেনি?
কখনো জানতে চাইনি তা
টেলর, ক্যান্টর, ডি’মইবারস আর আর্গন্ডদের মাঝে
কেটেছে সকাল-দুপুর, অলৌকিক ঈশ্বর কখনো আসেনি কাছে।

শহরের অন্যকোন লেইনে ভোর হয় কৃষ্ণপ্রাণ সুকান্তের
৪৭/৫২, ঈশ্বর নন্দী লেইন, দিদার মার্কেট, চট্টগ্রাম
ঠিকানায় থাকে না এখন, আসে না ঘন্টিময় ভোর
ঈশ্বর নন্দীর খবরও নেয় না কেউ!