দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : পৃথক তিনটি মামলায় বিনা বিচারে প্রায় দেড় দশক ধরে কারাগারে থাকা তিন আসামিকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন আসামি হলেন-মকবুল, সেন্টু ও বিল্লাল হোসেন।

তবে হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থাকায় বন্দি চাঁন মিয়া জামিন পাননি। তাঁর মামলাটি ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে ওই চার আসামিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ। আসামিদের মধ্যে চাঁন মিয়া, মকবুল ও সেন্টু ১৫ থেকে ১৭ বছর ধরে কারাগারে আছেন। চার আসামির বক্তব্য শুনে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁদের জামিন বিষয়ে রুল শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

আদালতে শুনানিতে অংশ নেন গণমাধ্যমের সংবাদ নজরে আনা আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা ও কুমার দেবুল দে। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শহীদুল ইসলাম খান।

বিনা বিচারে ১৫ থেকে ১৭ বছর ধরে কারাগারে থাকা চাঁন মিয়া, মকবুল, সেন্টু ও বিল্লালকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সংবাদ আমলে নিয়ে ২০ নভেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই রুল জারি করেন।

ওইদিনই ৪ ডিসেম্বর আসামিদের হাইকোর্টে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আদালত এসব আসামির নামে থাকা মামলার নথিপত্রও তলব করেছেন।

এই ৪ জনকে নিয়ে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে গত ১৬ নভেম্বর প্রচারিত একটি প্রতিবেদন আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা ও কুমার দেবুল দে হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে এই আদেশ দেন।

আসামিদের মধ্যে ঢাকার শ্যামপুর থানার এক হত্যা মামলায় ১৯৯৯ সাল থেকে চাঁন মিয়া কাশিমপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন। গত ১৭ বছরেও চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া হত্যা মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। মামলাটি বর্তমান ঢাকার পরিবেশ আদালতে বিচারাধীন।

একইভাবে মকবুল রাজধানীর উত্তরা থানার একটি হত্যা মামলায় ২০০০ সাল থেকে কারাগারে আছেন। ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মকবুলে পক্ষে আইনি লড়াই করারও কেউ ছিল না।

মতিঝিলের এজিবি কলোনির সেন্টু কামাল গ্রেফতার হন ২০০১ সালে। সবশেষ গত মাসেও তাকে হাজির করা হয়েছিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে। কিন্তু এই দীর্ঘ ১৫ বছরে ৫৯ কাযদিবস কারাগারে হাজির করা হলেও মামলা শেষ হয়নি।

মামলা শেষ হয়নি কুমিল্লার বিল্লাল হোসেনেরও। তেজগাও থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় যিনি কাশিমপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন ২০০২ সাল থেকে। তার মামলাটিও বিচারাধীন রয়েছে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এমকে/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৬)