বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়কের ৯০ ভাগ কাজ শেষ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কক্সবাজার সড়ক বিভাগের বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক (বালুখালী-ঘুমধুম) বর্ডার রোড নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এই সড়কের দুই কিলোমিটার নির্মাণকাজ শেষ হলে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। এ ছাড়া ৫টি আন্তঃদেশীয় সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সঙ্গে বাংলাদেশ সংযুক্ত আছে।
দশম জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ (১৩তম) অধিবেশনে রবিবার বিকেলে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফ ও কুমিল্লা-৮ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মিলনের আলাদা দুটি প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ৮৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এই প্রকল্পটির কাজ বিগত ২০১৫ সালের জুন মাসের আরম্ভ হয়েছে। ডিপিপি অনুযায়ী ২০১৭ সালে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সড়কটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইসিবি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বলে জানান তিনি।
কুমিল্লা-৮ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মিলনের এক প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ভারতের সঙ্গে মহাসড়ক পথে যোগাযোগ আছে। বিআরটিসির উদ্যোগে বাস নিয়মিত ভারতে বিভিন্ন রুটে আসা-যাওয়া করে থাকে।
তিনি বলেন, আন্তঃদেশীয়, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগে মহাসড়ক নেটওয়ার্ক সর্বাধিক গুরুত্ব বহন করে। ভৌগোলিক অবস্থানগত সুবিধার কারণে ৫টি আন্তঃদেশীয়, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক মহাসড়ক নেটওয়ার্ক উদ্যোগের সাথে বাংলাদেশ সম্পৃক্ত। উদ্যোগগুলো হলো- এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক, সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপরাশেন (সাসেক), বাংলাদেশ চায়না ইন্ডিয়া মায়ানমার ইকোনমিক করিডর (বিসিআইএম-ইসি), সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপরাশেন (সার্ক), বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টর টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) এবং বাংলাদেশ, চায়না, ইন্ডিয়া, নেপাল (বিবিআইএন) মোটর ভেহিক্যালস এগ্রিমেন্ট (এমভিএ)।
বিবিআইএন রুটের মাধ্যমে এ যোগাযোগ ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে মিয়ানমার হয়ে চীন পর্যন্ত এ যোগাযোগ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমানে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আওতাধীন মোট ৪ হাজার ২২টি সেতু আছে। তার মধ্যে ৩ হাজার ৯৬৬টি সেতু টোলমুক্ত এবং ৫৭টি সেতু হতে টোল আদায় করা হয়।
রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিনের এক প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধকল্পে প্রণীত ন্যাশনাল রোড সেফটি স্ট্র্যাটেজিক অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৪-১৬) বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন আছে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআই)-এর সহায়তায় জাতীয় মহাসড়কে মোট ২০৯টি দুর্ঘটনাপ্রবণ (ব্ল্যাক স্পট) এলাকা চিহ্নিত করা হয়। পরবর্তীতে সওজ কর্মকর্তাদের পরিদর্শনের ভিত্তিতে আরও ১৮টি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়। ফলে ২২৭টি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়। তার মধ্যে ২৭টি স্থানে রক্ষণাবেক্ষণ খাত হতে সওজের মাঠপর্যায় কর্তৃক ইতিমধ্যে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ৫৬টি স্থানের কাজ বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায়; যেমন- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৩১টি, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ১০টি, জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কে চারর লেনে উন্নীতকরণ প্রকলে। পর মধ্যে ১৫টি স্থান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অবশিষ্ট ১৪৪টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানের Countermeasures প্রণয়ণ করে, সরকারের অর্থায়নে ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘জাতীয় মহাসড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানসমূহে সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়ন প্রকল্প’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। আগামী ২০১৭ সালের জুন মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে সংসদকে জানান মন্ত্রী।
(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এপি/এম/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৬)