দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক :  ১০ম জাতীয় সংসদের ১৩তম অধিবেশন চলাকালে রবিবার সন্ধ্যা ৭টার পর হঠাৎ কয়েকটি বিকট শব্দ শোনা যায়। পর পর কয়েকটি বিকট শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সংসদ ভবনের ভেতর ও বাইরে। কোনো নাশকতা হয়েছে কিনা- এ আশঙ্কায় জাতীয় সংসদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দিকদ্বিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ এলাকা ত্যাগ করার পরপরই এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অর্জনের সাফল্য উদযাপনের জন্য জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় মহড়া চলাকালে আতশবাজি করা হয়। আতশবাজির এমন বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সংসদের ভেতরে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। সংসদে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেককে এ সময় আতঙ্কে সিঁড়ি বেয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও এ সময় দিকদ্বিক ছুটতে থাকেন। একজন আরেকজনের সঙ্গে বলাবলি করতে থাকেন গোলাগুলি হচ্ছে মনে হয়। এক পুলিশ সদস্য দৌঁড়ে এসে বলেন, ‘ভাই গোলাগুলি হচ্ছে। আরেকজন বলেন, বাইরে আগুন জ্বলছে।’

আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাংবাদিক গ্যালারিতেও। আসলে কি ঘটেছে তা দেখতে সাংবাদিক গ্যালারি থেকে বাইরে বের হওয়ার পর দেখা যায় উৎসুক লোকজন এদিক ওদিক ঘুরছেন। তারাও জানার চেষ্টা করছেন আসলে কি ঘটেছে। সংসদের অভ্যন্তরে দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,‘ভাই অনেকে নামাজ শেষ না করেই দৌঁড়াতে থাকেন। ভয়ে সবাই দৌড়াদৌড়ি করতে থাকেন।’

ঘটনা কি ঘটেছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসছে ৭ ডিসেম্বর বিদ্যুতের ১৫ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করায় উৎসব করা হবে। এজন্য একটি মহড়া চলছিল দক্ষিণ প্লাজায়।

এ বিষয়টি নিয়ে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া জাতীয় সংসদের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মসকে ডেকে জানতে চান সংসদ অধিবেশন চলাকালীন এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটানো হলো। এর জবাবে সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস জানান, এতে স্পিকারের অনুমতি রয়েছে।

এ ব্যাপারে জাতীয় সংসদের ডেপুটি সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস এম, সাদরুল আহমেদ খান দ্য রিপোর্টকে বলেন, আগামী ৭ ডিসেম্বর ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন উদযাপনকরবে সরকার। ওই দিন সকালে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন। বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আতশবাজী হবে। এ উপলক্ষ্যেই বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে আজ মহড়া দেয়।

সংসদ অধিবেশন চলা অবস্থায় এ ধরনের আতশবাজী করার নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই এ মহড়া করেছেন।

সংসদ থেকে প্রধানমন্ত্রী বের হয়ে যাওয়ার পর পরই সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আতশবাজি করা হয় বলে জানা যায়।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এপি/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৬)