মেধাসম্পদের স্বীকৃতি আদায়ে সংসদে বিল পাস
দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : জাতীয় সংসদে ‘ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন-২০১৩’ পাস হয়েছে। এই বিলটি কার্যকর হলে পদ্মার ইলিশ, ঢাকার জামদানি, নকশী কাঁথা, কুমিল্লার রসমালাই ও নাটোরের কাঁচাগোল্লাসহ এ ধরনের অন্যান্য সম্পদকে দেশীয় ঐতিহ্য ও মেধাসম্পদ হিসেবে ভৌগলিক পরিচয় ও আইনি স্বীকৃতি আদায় করা সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন শিল্প মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। বিলটির উপর বিরোধী দলীয় সদস্যরা জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব জমা দিলেও অনুপস্থিতির কারণে তা উত্থাপিত হয়নি। পরে কন্ঠভোটে বিলটি পাস হয়। এর আগে গত ২৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদে এই বিলটি উত্থাপন করা হয়।
পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, মেধা সম্পদগুলোর স্বীকৃতি পেতে বিষয়টি নিবন্ধন করতে আইনের অধীন গঠিত কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে। ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা সরকারি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবে। কোন আপত্তি উঠলে শুনানির মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও বলা হয়েছে, নিবন্ধিত ভৌগলিক নির্দেশক পণ্যের অনুমোদিত ব্যবহারকারী নিবন্ধনের মেয়াদ হবে ৫ বছর। মেয়াদ শেষে আরও ৩ বছরের জন্য নিবন্ধন নবায়ন করা যাবে। নিবন্ধিত পণ্য কারও কাছে হস্তান্তর বা বন্ধক রাখা যাবে না।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি ‘মিথ্যাভাবে’ পণ্য ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। প্রতারণা করে পণ্যে বা মোড়কে ভৌগলিক নির্দেশক ব্যবহার করলেও একই শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ভৌগলিক নির্দেশক হচ্ছে একটি চিহ্ন বা প্রতীক। যে প্রতীকের একটি নির্দিষ্ট উৎস রয়েছে এবং যে প্রতীক ওই ভৌগলিক উৎসজনিত নির্দিষ্ট গুণগতমান বা সুনাম ধারণ করে। বাংলাদেশের নিজস্ব ভূখন্ডে প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর নির্ভর করে বেশকিছু পণ্য উৎপন্ন হয়ে থাকে (যেমন- উৎকৃষ্টমানের সুগন্ধি চিনিগুড়া চাল, পদ্মার ইলিশ ইত্যাদি)। এছাড়া বেশকিছু পণ্য প্রক্রিয়াজাত করা হয়ে থাকে (যেমন- টাঙ্গাইলের চমচম, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, চা, চামড়া ইত্যাদি)। মৌলিক ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের হস্ত ও কুটির শিল্পজাত পণ্যেরও দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্য হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে (নকশি কাঁথা, জামাদানি শাড়ি ইত্যাদি)। বিভিন্ন ভৌগলিক অঞ্চলে উৎপাদিত এ ধরণের পণ্য চিহ্নিতকরণ, নিবন্ধন ও পণ্যের অনুমোদিত ব্যবহারকারীর স্বার্থ সুরক্ষা করাই এ আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য।
আরও দু’টি বিল পাস হয়েছে
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উত্থাপিত ‘এশিয়ান রি ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন বিল ২০১৩’ এবং নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান উত্থাপিত ‘পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল ২০১৩’ পাস হয়েছে।
এছাড়া পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির দ্বিতীয় রিপোর্ট সংসদে উত্থাপন করা হয়। কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব আলী সানা ওই রিপোর্টটি উত্থাপন করেন।
(দিরিপোর্ট২৪/আরএইচ/জেএম/নভেম্বর ০৬, ২০১৩)