‘মানবমুক্তিতে কবিদের বিকল্প নেই’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ‘শিল্পের বিস্তৃত ভুবনকে ঋদ্ধ করার পাশাপাশি মানবমুক্তির অঙ্গীকারই কবিদের বৈশিষ্ট্য। তাই মানবমুক্তিতে কবিদের বিকল্প নেই।’ মঙ্গলবার বিকেলে গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত কবি মোহাম্মদ মাহফুজউল্লাহ্, কবি দিলওয়ার এবং কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তিনটি পৃথক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে হাসান হাফিজ, মোস্তাক আহমদ দীন এবং অনু হোসেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমিত্র শেখর এবং তারেক রেজা। সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
প্রাবন্ধিকত্রয় বলেন, দিলওয়ার যে সমাজের মানুষকে নিয়ে কবিতা লিখে গেছেন আজীবন, সেই সমাজ-মানুষের সংকট-শোষণ-সম্প্রদায়ভেদ প্রভৃতি তো কেটে যায়নি আজও, বরং কোনো-কোনো ক্ষেত্রে তা আরও ভয়াল রূপ ধারণ করেছে। সেই কারণে ভিন্ন পাঠ-অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও দিলওয়ারের কবিতা, তাঁর কবিতার বিষয় ও শুভ আকাঙ্ক্ষার জন্য এখনকার পাঠককে তো আকৃষ্ট করছেই, ভবিষ্যতের পাঠককেও আকৃষ্ট করবে।
খোন্দকার আশরাফ হোসেনের বড় পরিচয় তিনি কবি। কেবল মনে নন, মননে তিনি কবি; ব্যক্তিবিশ্বে ঘরে-বাইরেও কবি। আর সর্বান্তকরণে কবি বলেই তাঁর আত্মপরিচয়ের আরও কয়েকটি ডালপালা মেলে দিয়েছেন প্রবল আত্মবিশ্বাস ও শক্ত ভিত নির্মাণের সঙ্গে। তিনি হয়ে উঠেছিলেন সমকালের দক্ষ ও দায়িত্বশীল অনুবাদক, নন্দনচিন্তক, প্রাবন্ধিক, সমালোচক, ভাষাতাত্ত্বিক ও পরিশ্রমী ছোট কাগজ সম্পাদক।
মোহাম্মদ মাহফুজউল্লাহ্ শেষ পর্যন্ত সমকালীন যুগযন্ত্রণার শিকার হয়েও নৈরাজ্যে নিমজ্জিত নন। তাঁর কাজে তিনি শুভ ও কল্যাণকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। নিজের অন্তরসত্তাকে, আবেগ ও অনুভূতিকে আকর্ষণীয় চিত্রকল্পের মাধ্যমে রূপায়িত করার প্রয়াস পেয়েছেন। বিশেষভাবে তাঁর ভাবের অভিব্যক্তি তাঁকে একজন যত্নবান কৃতী কারুশিল্পীরূপে তুলে ধরছে। নজরুল গবেষণায় তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
আলোচকবৃন্দ বলেন, তিনজনই প্রথমত কবি। অন্তর্গত শুদ্ধ কবিসত্তাই তাঁদের আরও বৃহৎ শিল্প পরিসরে নিয়ে গেছে। গবেষণা-সাংবাদিকতা-সম্পাদনা ইত্যাদি বিচিত্রবিধ কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে তাঁরা আমাদের সাহিত্যভুবনকে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছেন তা উত্তর প্রজন্মের লেখকদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী শাহাদাৎ হোসেন নিপু, রফিকুল ইসলাম এবং মিজানুর রহমান সজল। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী স্বপন দত্ত, সাজেদ আকবর, নাশিদ কামাল, মো. হারুন অর রশিদ, শারমিন সাথী ইসলাম, মাহজাবিন রহমান শাওলী, শুভ্রা দেবনাথ এবং মীর ইউসুফ। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ পাল (তবলা), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), আলমাস আলী (বেহালা), নাজমুল আলম খান (মন্দিরা) এবং রবিনস চৌধুরী (কী-বোর্ড)।
বুধবারের অনুষ্ঠান
বুধবার বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘নজরুল চর্চায় বিদেশিদের অবদান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন রশীদ হায়দার, মাহবুবুল হক এবং গুলশান আরা কাজী। সভাপতিত্ব করবেন নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। সন্ধ্যায় পরিবেশিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
(দ্য রিপোর্ট/জেএইচ/এপি/এনআই/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৪)