পুনঃময়নাতদন্ত সম্পন্ন
‘দিয়াজের দেহে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর (২৮) পুনঃময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা সোয়া ২টার দিকে ময়নাতদন্ত শুরু হয় ও বেলা ৩টার দিকে তা শেষ হয়। ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড ময়নাতদন্ত করে।
তদন্ত শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, দিয়াজের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি আরও জানান, তার মুখ থেকে দাঁত, গলা থেকে টিস্যু এবং ভিসেরা সংরক্ষণ করা হয়েছে। সবগুলোই পরীক্ষার জন্য হিস্ট্রি প্যাথলজিতে পাঠানো হবে।
ময়নাতদেন্তর প্রতিবেদন কবে নাগাদ পাওয়া যাবে-এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. সোহেল বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবো, সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলবো। পূর্বের ময়নাতদন্তকারী ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলবো। তারপর আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করবো। মেডিকেল বোর্ডের অপর দুই চিকিৎসকরা হলেন-প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস ও ডা. কবির সোহেল।
এদিকে মর্গের সামনে কান্না জড়িত কন্ঠে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বার বার বলছেন, তার ছেলে আত্মহত্যা করেনি।তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলেহত্যার বিচার চান তিনি।
আদালতের নির্দেশে পুনঃময়নাতদন্তে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদের কবরস্থান থেকে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দিয়াজের লাশ তোলা হয়। ওইদিন বেলা সোয়া ২টার দিকে তার লাশ চট্টগ্রাম থেকে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়। তবে কাগজের কিছু জটিলতা থাকায় শনিবার ময়নাতদন্ত হয়নি।
গত ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেট এলাকার নিজস্ব ভাড়া বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চমেক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে দিয়াজ আত্মহত্যা করেছে বলে বলা হয়। কিন্তু দিয়াজের পরিবারের দাবি, তাকে খুন করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
দিয়াজের মৃত্যুর ঘটনায় ২৪ নভেম্বর তার মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এরই প্রেক্ষিতে গত ৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দের আদালত পুনরায় ময়নাতদন্তে দিয়াজ ইরফানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনে সিআইডিকে নির্দেশ দেন।
আদালতের সে নির্দেশ মোতাবেক দিয়াজের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয় এবং ঢামেকে পুনঃময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/ আরএস/এমকে/ডিসেম্বর ১১, ২০১৬)