পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ কমানোর নির্দেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে যে সব ব্যাংকের বিনিয়োগ রেগুলেটরি মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি রয়েছে সে সব ব্যাংকের বিনিয়োগ আইনি সীমার মধ্যে নামিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মঙ্গলবার দুপুরে বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী।
এসকে সুর চৌধুরী বলেন, ‘তিন বছরের মধ্যে ব্যাংকের বিনিয়োগ ২৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার যে নির্দেশনা রয়েছে সেটি ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে করে শেয়ার বাজার কিছুটা ঝুঁকিমুক্ত হবে।’
প্রতি তিন মাস অন্তর ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবারে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানসহ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, ‘আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা সুদৃঢ় রাখার স্বার্থে মুদ্রাবাজার ও পুঁজিবাজার উভয় বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। আপনারা জানেন, পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঋণভারগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তার লক্ষ্যে সরকারকে প্রদেয় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুনাফা থেকে ৯০০ কোটি টাকার একটি তহবিল আইসিবি’র মাধ্যমে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ আইনি সীমার মধ্যে রাখা/নামিয়ে আনার লক্ষ্যে আপনারা সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে আমাদের অবহিত করবেন এবং তা অনুসরণ করবেন। আইনের মধ্যে থেকেই মুদ্রাবাজার ও পুঁজিবাজার একে অপরকে সমর্থন দিয়ে যাবে-এ প্রত্যাশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছর শেষে গড় মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা, রিজার্ভ মানি ও ব্যাপক মুদ্রা যোগানের প্রবৃদ্ধির ঊর্ধ্বসীমা যথাক্রমে ১৬.২ ও ১৭.০ শতাংশে নির্ধারণ এবং বেসরকারি খাতে ঋণ যোগানের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১৬.৫ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণগ্রহণের মাত্রা পরিমিত রাখা, অর্থনীতির বহিঃখাতের স্থিতিশীলতা অর্জন ও বিনিময় হারে অস্বাভাবিক অস্থিতিশীলতা পরিহার করাও মুদ্রানীতির অন্যতম লক্ষ্য। ব্যাংক ব্যবস্থার স্বল্পমেয়াদি আমানত ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের জন্য সুলভ রাখতে দেশের বড় কর্পোরেট ও কংগ্লোমারেট গ্রুপগুলোকে অর্থায়নের জন্য ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে পুঁজিবাজারকে প্রাধান্য দেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
আতিউর রহমান বলেন, ‘ডিসেম্বর ২০১৩ প্রান্তিকে ব্যাংকিং খাতে শ্রেণীকৃত ঋণের হার কমে ৮.৯৩ শতাংশ এবং নিট শ্রেণীকৃত ঋণের হার ২.০১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এক বছর আগে (ডিসেম্বর ২০১২) এ হার ছিল যথাক্রমে ১০.০৩ ও ৪.৩৮ শতাংশ। শ্রেণীকৃত ঋণের এ হার ব্যাংকগুলোর ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ এর অনিরীক্ষিত ব্যালেন্স-শিটের ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুতকৃত।’
বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আরও বলেন, ‘সম্প্রতি কিছু কিছু ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের ব্যাংক গ্যারান্টি নগদায়নে নানা অজুহাতে অনীহা ও বিলম্ব প্রদর্শন করছে। এ ধরনের অনেক অভিযোগ আমাদের কাছে আসছে। এ কারণে যাদের অনুকূলে গ্যারান্টি ইস্যু করা হয়েছিলন তারা আর্থিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই ব্যাংক গ্যারান্টির মূল্য যথাসময়ে পরিশোধে আপনারা তৎপর থাকবেন-এটাই কাম্য। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের রিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা বাধ্য হব।’
(দ্য রিপোর্ট/এএইচ/এনডিএস/এএল/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৪)