বিশেষ প্রতিনিধি : চেক জালিয়াতি মামলায় চট্টগ্রামের চার শিল্পপতির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন মহানগর ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের (১) বিচারক এসএম মুজিবুর রহমান।

মামলার আসামিরা হলেন- নূরজাহান গ্রুপের মেরিন ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহম্মদ এবং তার ভাই একই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও একই গ্রুপের মেসার্স জাসমিয়া ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের চেয়ারম্যান টিপু সুলতা, এস এ গ্রুপের সামান্নাজ সুপার অয়েল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাবউদ্দিন আলম এবং তার স্ত্রী একই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ইয়াসমিন আলম।

চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. ওমর ফুয়াদ জানান, একটি মামলায় জহির আহম্মদ ও টিপু সুলতানকে আসামি এবং অপর তিনটি মামলায় এককভাবে আসামি হলেন টিপু সুলতান।

মো. ওমর ফুয়াদ আরও জানান, আসামি জহির আহম্মদ ও টিপু সুলতানকেযৌথভাবে একটি মামলায়, টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে এককভাবে তিনটি মামলায় এবং শাহাবউদ্দিন দম্পতির বিরুদ্ধে তিনটি মামলায়গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, অভিযোগ গঠনের শুনানিতে অভিযুক্তরা হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

তিনি আরও জানান, এস এ গ্রুপের সামান্নাজ সুপার অয়েল লিমিটেডের নামে আগ্রাবাদ ফিনলে হাউসের ঠিকানায় অগ্রণী ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়। ওই ঋণ পরিশোধের জন্য সামান্নাজের পক্ষ থেকে ২০১৩ সালের ২১ মে অগ্রণী ব্যাংককে তিনটি চেক প্রদান করা হয়। এর মধ্যে কমার্স ব্যাংকের অনুকূলে চার কোটি ৫০ লাখ পাঁচ হাজার টাকা ও ২০ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার দুটি এবং ঢাকা ব্যাংকের অনুকূলে ৪৯ কোটি ১০ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করা হয়।

চেকে নির্ধারিত তারিখে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখায় অগ্রণী ব্যাংকের পক্ষ থেকে টাকা গ্রহণ করতে গেলে ‘অপর্যাপ্ত তহবিলের’ জন্য চেকগুলো ডিজঅনার হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয় এবং দুই দফায় লিগ্যালনোটিশদেওয়ার পরও তারাকোনো সদুত্তর দেননি।

২০১৩ সালের ৪ জুলাই অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখার সিনিয়র অফিসার সুলতান আহমেদ বাদি হয়ে মহানগর হাকিম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় শাহাবউদ্দিন আলম ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন আলমকে অভিযুক্ত করা হয়।

নগরীরফৌজদারহাট শিল্প এলাকায় জহুর আহমেদ স্টেডিয়াম সংলগ্ন নূরজাহান গ্রুপের মেরিন ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের নামে কমার্স ব্যাংকথেকে ৫৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়। ওই ঋণের বিপরীতে ২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল মার্কেন্টাইল ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার বিপরীতে পাঁচ কোটি টাকার একটি চেক দেন। একই দিন চেকের বিপরীতে কমার্স ব্যাংকের পক্ষ থেকে টাকা উত্তোলন করতে গেলে ‘অপর্যাপ্ত তহবিলের’ জন্য চেক ডিজঅনার হয়।

একইভাবে সোনালী ব্যাংক থেকে বিভিন্ন সময়ে নেওয়া ঋণের বিপরীতে ২০১২ সালের ২৮ জুন পাঁচ কোটি টাকার দুইটি এবং চার কোটি টাকার একটিসহ মোট তিনটি চেক প্রদান করে মেসার্স জাসমিয়া ভেজিটেবল অয়েলের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান। ওই তিনটি চেকও ‘অপর্যাপ্ত তহবিলের’ কারণে ডিজঅনার হয়।

(দ্য রিপোর্ট/কেএইচ/এমএআর/এএল/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৪)