চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের ভোট যুদ্ধ আজ
![](https://bangla.thereport24.com/article_images/2014/02/19/Mahfuz01.jpg)
মাহফুজ স্বপন, দ্য রিপোর্ট : চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম পর্বের ভোট যুদ্ধ বুধবার শুরু হচ্ছে। ৪০ জেলার ৯৭ উপজেলার ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। উৎসব ও আমেজ বিরাজ করছে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকাগুলোতে।
নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সোমবার থেকে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। সঙ্গে রয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।
সোমবার মধ্যরাত থেকে শেষ হয়েছে মিছিল-মিটিংসহ সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। এত বড় নির্বাচনে শেষ পর্যায়ে এসে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কেন্দ্রীয় মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করা হয়।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন উপজেলা পরিষদের এ নির্বাচন দলীয় ব্যানারে না হলেও দলীয় প্রভাব রয়েছে সবখানে। আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের পছন্দ মতো প্রার্থী দিয়েছে। রয়েছে প্রধান দুটি দলেরই অসংখ্য বিদ্রোহী প্রার্থী।
নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মাঝে রয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। ভোটগ্রহণ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে ইসি।
দশম সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ না নিলেও উপজেলা নির্বাচনে তারা অংশ নিচ্ছে। যে কারণে উপজেলা নির্বাচন বরাবরের চেয়ে এবার হয়ে উঠেছে আরও জমজমাট। ফলে এ নির্বাচন ঘিরে বিরাজ করছে জাতীয় নির্বাচনের আমেজ।
নির্বাচন কমিশন প্রথম দফায় ১০২টি উপজেলার তফসিল ঘোষণা করলেও বুধবার ভোট হবে ৪০ জেলার ৯৭টি উপজেলায়। সীমানা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতার কারণে রংপুরের চারটি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। এ দফায় পীরগঞ্জ উপজেলার ভোট হবে ২৪ ফেব্রুয়ারি।
নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শন্তিপূর্ণ করতে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। সারাদেশে ৪৮৭ উপজেলায় এ পর্যন্ত চার ধাপে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিবালয়ের সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান জানান, নির্বাচনের ৩২ ঘণ্টা পূর্বে সকল প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকবে। তা অব্যাহত থাকবে নির্বাচনের পর ৬৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। কেউ আইন ভঙ্গ করলে কারাদণ্ড ও আর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এমনকি প্রার্থিতাও বাতিল হবে।
সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে প্রথম ধাপের নির্বাচন সম্পন্ন করতে সোমবার থেকে ৯৭ উপজেলায় নেমেছে সেনাবাহিনী। নির্বাচনের আগে ও পরে মিলিয়ে মোট পাঁচ দিন তারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবেন তারা। প্রতি উপজেলায় এক প্লাটুন করে সেনাবাহিনীর সদস্য টহল দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি দলে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি প্রতি উপজেলায় সেনাবাহিনীর দুই থেকে তিনটি গাড়ি থাকবে। সঙ্গে সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার ও একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।
এ ছাড়া মোবাইল ফোর্স হিসেবে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকছে। প্রতি কেন্দ্রে একজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), একজন আনসার (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার ১০ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৬) এবং আনসার একজন (লাঠিসহ) ও গ্রামপুলিশ একজন করে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবে।
নির্বাচনে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৩৮৮ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৯৭ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
৯৭টি উপজেলায় মোট এক হাজার ২৭৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৪৩২ জন। ভাইস-চেয়ারম্যান (পুরুষ) প্রার্থীর সংখ্যা ৫১৩ জন। ভাইস-চেয়ারম্যান (মহিলা) প্রার্থীর সংখ্যা ৩২৯ জন।
এ সব এলাকায় মোট ভোটার এক কোটি ৬৪ লাখ ৭৮ হাজার ১৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮১ লাখ ৯১ হাজার ৫৩৭ জন, মহিলা ভোটার ৮২ লাখ ৮৬ হাজার ৬৩৫ জন।
মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছয় হাজার ৯৯৫টি, ভোটকক্ষ ৪৩ হাজার ২৯০টি। প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকেন্দ্রে একজন করে ছয় হাজার ৯৯৫ জন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকক্ষের জন্য একজন করে মোট ৪৩ হাজার ২৯০ জন এবং পোলিং অফিসার সংখ্যা ৮৬ হাজার ৫৮০ জন।
(দ্য রিপোর্ট/এমএস/এমএআর/এসবি/এএল/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৪)