সিরিয়ার শরণার্থী শিশুদের পাশে মালালা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : পাকিস্তানি আন্দোলনকর্মী মালালা ইউসুফজাই জর্ডানে অবস্থিত সিরিয়ার জাতারি শরণার্থী ক্যাম্প সফর করেছেন।
পাঁচ ঘণ্টার এ সফরে মালালা বলেন, ‘সিরিয়ার শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষা ছাড়া নোংরা রাস্তায় খালিপায়ে দৌঁড়াতে দেখে আমার হৃদয় ভেঙে যায়।’
মালালা আরো জানায়, শিক্ষাবঞ্চিত সিরিয়ার শরণার্থী শিশুদের অবস্থা তালেবান শাসনের অন্ধকার সময়ে পাকিস্তানি শিশুদের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
মালালা বলেন, ‘আমি নিজ চোখে সন্ত্রাসবাদ দেখেছি। স্কুলগুলোতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। সিরিয়া সংঘাতে অনেকটা একই রকম ঘটনা ঘটছে। শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। শিশুদের অনেকেই গত তিন বছরে স্কুলে যায়নি।’
ওই শরণার্থী শিবিরটিতে সিরিয়ার ১ লাখ ২০ হাজার শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে ৫০ হাজারের বয়স ১৬ বছরের নিচে।
সিরিয়ায় তিন বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে অন্তত ২৩ লাখ মানুষ গৃহহারা হয়েছে। তারা পার্শ্ববর্তী জর্ডান, লেবানন, তুরস্ক ও ইরাকে আশ্রয় নিয়েছে। শরণার্থীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ ১১ লাখই শিশু। এ সব শিশুর ৭৫ শতাংশের বয়স ১২ বছরের নিচে বলে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা আরো জানিয়েছে, যুদ্ধের কারণে এসব শিশুর ক্ষতি হচ্ছে। তারা পরিবারের সদস্যদের ছাড়াই বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছে। অনেক সময় শারীরিক শ্রম দিতেও বাধ্য হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী হচ্ছে শিশুরা। জাতারি ক্যাম্পের ৬৮০টি ছোট দোকানের অধিকাংশ কর্মচারীই শিশু।
জাতারিতে জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলও আছে কয়েকটা। সেখানে ফুটবল খেলার মাঠ ও দোলনাসহ অন্য খেলার মাঠও আছে। তবে অনেক দিন পড়াশোনা থেকে দূরে থাকায় শিশুরা স্কুলে যেতে খুব একটা উৎসাহবোধ করে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
শরণার্থী ক্যাম্পের কিশোরীরা পারিবারিক নিষেধাজ্ঞারও শিকার হচ্ছে। রক্ষণশীল পরিবারগুলোর কিশোরীদের অচেনা কারো সঙ্গে বাইরে যেতে দেওয়া হয় না।
মামালা জাতিসংঘ পরিচালিত কয়েকটি খেলার মাঠও পরিদর্শন করেছে। সিরিয়ার শরণার্থী শিশুদের শিক্ষার জন্য নিউইয়র্কভিত্তিক মালালা ফান্ডে অর্থায়নের পরিকল্পনা আছে মালালার। (সূত্র : এএফপি)
(দ্য রিপোর্ট/কেএন/এমডি/এজেড/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৪)