ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : স্বাধীতার ৪৫ বছর পার হলেও ভাগ্যবদল হয়নি মুক্তিযোদ্ধা জোনাব আলীর। দেশমাতৃকাকে স্বাধীন করতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। যুদ্ধ করেছিলেন ঝিনাইদহের বিষয়খালী এলাকায়। রণাঙ্গনের সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো তাকে তাড়া করে ফেরে। তার সঙ্গে অনেকেই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটে অনেকের নাম উঠলেও তার নাম আর ওঠেনি। কিন্তু রণাঙ্গনের এই যোদ্ধার এখন সার্টিফিকেটই ভরসা। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ভারতের মাজদিয়া যুব ক্যাম্পে। সেখান থেকেই পেয়েছিলেন সার্টিফিকেট; কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার নাম তালিকায় ওঠেনি।

জোনাব আলী ১৯৫৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গাগান্না গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মৃত. ইশারত আলী মন্ডল। একাত্তরে যখন যুদ্ধ শুরু হয়, তখন তিনি কিশোর। কিশোর বয়সেই বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। চোখের সামনে অনেক সহযোদ্ধাকে জীবন দিতে দেখেছেন।

জোনাব আলী জানান, জেবা মুন্সী নামে এক কমান্ডারের অধীন তিনি বিষয়খালী ফ্রন্টে যুদ্ধ করেছেন। তিনি হতদরিদ্র হওয়ায় মাজদিয়া যুব ক্যাম্পের প্রশিক্ষণ সনদ ছাড়া তার কাছে আর কিছুই নেই। তার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন সদর উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের ফজলুর রহমান, একই গ্রামের ইসাহাক আলী ও আবুল কাশেম। তাদের নাম তালিকায় উঠলেও তিনি বছরের পর বছর ঘুরেও নাম ওঠাতে পারেননি গেজেটে। মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান, ইসাহাক আলী ও আবুল কাশেমও জানালেন জোনাব আলী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাদের দাবি- জোনাব আলীর নাম তালিকাভুক্ত করার। জোনাব আলী জানান, তিনি এ পর্যন্ত বহুবার ফরম পূরণ করে জমা দিয়েছেন, কিন্তু গেজেটে তার নাম আসেনি। স্ত্রী সন্তান নিয়ে তিনি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন রণাঙ্গনের এই যোদ্ধা। স্টেনগানের গুলিতে পাক বাহিনীকে পরাস্ত করলেও অভাবের কাছে তিনি এখন এক পরাজিত সৈনিক।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অফিসে যোগাযোগ করা হলে জোনাব আলীর বিষয়ে কোনো তথ্য তারা দিতে পারেনি ।

(দ্য রিপোর্ট/এম/এনআই/ডিসেম্বর ২০, ২০১৬)