মনোয়ার জাহান চৌধুরী, সিলেট : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শুধু সিলেটবাসীই নয়; পুরো দেশের মানুষের কৌতুহল ছিল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ‘নিখোঁজ’ এম ইলিয়াস আলীর গ্রামের বাড়ি বিশ্বনাথের রামধানা ভোটকেন্দ্রে ভোট পড়া না পড়া নিয়ে। ভোট শেষে দেখা গেল, এ কেন্দ্রের ভোটাররা ভোটই দেননি। বিষয়টি বেশ আলোড়নও সৃষ্টি করেছিল।

তবে বুধবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণে এর ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গেছে। যে কেন্দ্রে ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটিও ভোট পড়েনি, সেই কেন্দ্রেই উপজেলা নির্বাচনে চলছে ভোট উৎসব। নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনাও ভোট দিয়েছেন উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে।

এদিকে, বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি-আওয়ামী লীগ-জামায়াত সব দলের প্রার্থী থাকায় নির্বাচন নিয়ে পুরো উপজেলায় ছিল প্রবল আগ্রহ।

এ ছাড়া ইলিয়াসপত্নী লুনাও এবার সন্তানদের নিয়ে উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে ইলিয়াসের গ্রামের বাড়ি রামধানায় এসেছেন। সেজন্যই রামধানার গ্রামের মানুষের মধ্যেও ছিল নির্বাচন নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা। তাই এবার আর কোনো ‘শূন্যতা’ নয়; বরং প্রবল আগ্রহ নিয়েই রামধানা ভোটকেন্দ্রে মানুষ ভোট দিচ্ছেন। ওই কেন্দ্রে মোট ১ হগাজার ৯১০টি ভোটের মধ্যে সকাল ১১টায় ভোট পড়েছে ২৬৯টি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলীর গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথের রামধানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন লুনা। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন।

ভোট দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের লুনা বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক নেত্রী হয়ে নয়, আমি এখানে একজন নাগরিক হিসেবে ভোট দিতে এসেছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে লুনা বলেন, যদি ‘অন্যরকম’ কিছু না হয়, তবে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীই জয়লাভ করবেন।

নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি কেমন দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ইলিয়াসপত্নী বলেন, ‘এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে, স্থানীয় পনাউল্লাহ বাজারে আমাদের প্রার্থীর এজেন্টকে নাকি কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’

ভোট দিতে আসা প্রবীণ আবদুস সালাম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন একতরফা হওয়ায় ভোট দিইনি। তবে এবার সব দল উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ভোট দিলাম।’

তার সুরে সুর মিলিয়ে সাহাব উদ্দিন রুবেল বলেন, ‘মূলত বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় আমাদের এই কেন্দ্রে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেউ ভোট দিতে আগ্রহ দেখায়নি। এবার মোটামুটি সব দলই নির্বাচনে আছে। সেজন্য উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন সবাই।’

প্রিসাইডিং অফিসার মাহমুদুল হাসান মানিক সকাল ১১টার দিকে দ্য রিপোর্টকে জানান, শান্তিপূর্ণভাবে সকাল থেকেই এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। এখন পর্যন্ত ২৬৯টি ভোট দেওয়া হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমজেসি/কেএন/এজেড/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৪)