বাড়ছে প্রার্থীদের ভোট বর্জনের সংখ্যা
সরকার সমর্থিত প্রার্থী ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের আমেজে ভোটগ্রহণ চলছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে। বুধবার দেশের মোট ৪০টি জেলার ৯৭টি উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকার নির্বাচন এটি। দেশের ইতিহাসে চতুর্থবারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করার এক মাসের মাথায় অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের কারণে এবারের উপজেলা নির্বাচন অন্যান্যবারের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
৯৭টি উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ১ হাজার ২৭৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৪৩২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) প্রার্থীর সংখ্যা ৫১৩ জন এবং ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) প্রার্থীর সংখ্যা ৩২৯ জন।
এ সব এলাকায় মোট ভোটার ১ কোটি ৬৪ লাখ ৭৮ হাজার ১৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮১ লাখ ৯১ হাজার ৫৩৭ জন এবং মহিলা ভোটার ৮২ লাখ ৮৬ হাজার ৬৩৫ জন।
মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৬ হাজার ৯৯৫টি, ভোটকক্ষ ৪৩ হাজার ২৯০টি। প্রিসাইডিং অফিসার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন করে ৬ হাজার ৯৯৫ জন। সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার প্রতিটি ভোটকক্ষের জন্য একজন করে মোট ৪৩ হাজার ২৯০ জন এবং পোলিং অফিসারের সংখ্যা ৮৬ হাজার ৫৮০ জন।
নির্দলীয় নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হলেও মূল লড়াইটি হবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৯ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ায় উভয় জোটের বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যাও কম নয়।
সোমবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হলেও প্রথম দুই ঘণ্টায় ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে।
এদিকে, দেশের বিভিন্ন উপজেলায় সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে। ভোটদানে বাধা, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ইতোমধ্যে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী রাকিবুল হাসান খান দিপু, পাবনার সুজানগর উপজেলার বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজারী জাকির হোসেন চুন্নু, বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল হোসেন মিয়া, বিদ্রোহী প্রার্থী লোকমান হোসেন খান, নুর আলম হাওলাদার, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মেহেদী হাসান শ্যামল খলিফা, শরীফ জহির সাজ্জাত হান্নান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তাছলিমা বেগম, বাকেরগঞ্জের বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী খলিলুর রহমান ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মশিউর রহমান নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এ সব জেলায় সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের দ্বারা ভোট কারচুপিসহ প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে বৃহস্পতিবার হরতাল ডেকেছে স্থানীয় বিএনপি।
ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলায় বিএনপির বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতারুজ্জামান টিটু নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দেন।
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ভোটকেন্দ্র দখল, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া ও সরকার সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে নির্বাচন বয়কট করেন।
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় ভোট কারচুপির অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহেদ পারভেজ আব্বাস মোল্লা।
এদিকে, দ্য রিপোর্টের জেলা প্রতিনিধিদের দেয়া তথ্যানুযায়ী ভোটগ্রহণের শুরু হতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ভোটার ভোটদানে অংশ নিয়েছেন। তবে জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বেশি বলে জানা গেছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরএইচ-এসআর/এমডি/এজেড/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৪)