চলতি বছর
৯ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকার জ্বালানি তেল আমদানি
চলতি বছর সৌদি আরব ও আবুধাবী থেকে ১৩ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৭৬৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা (এক হাজার ২৪৫ দশমিক ৯৫৫ মিলিয়ন ডলার)।
ইস্টার্ন রিফাইনারির (ইআরএল) তেল আমদানির প্রস্তাব বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) পরিচালকমণ্ডলীর সভায় ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার-সংক্ষেপ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান মঙ্গলবার রাতে দ্য রিপোর্টকে বলেন, দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারিতে ২০১৪ পঞ্জিকাবর্ষে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) ১৩ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে আবুধাবী ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি (অ্যাডনক) থেকে ৭ লাখ টন মারবান ক্রুড অয়েল ও সৌদি অ্যারাবিয়ান অয়েল কোম্পানি (সৌদি অ্যারামকো) থেকে ৬ লাখ টন অ্যারাবিয়াল লাইট ক্রুড অয়েল কেনা হবে।
প্রতি বছর ইস্টার্ন রিফাইনারির চাহিদা অনুযায়ী ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংকের তেল আমদানির জন্য দেওয়া ঋণ সুবিধার আওতায় এ তেল আমদানি করা হয়। এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি ক্রয় কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে বলেও জানান সচিব।
জ্বালানি বিভাগের সার-সংক্ষেপ সূত্রে জানা গেছে, আবুধাবী থেকে ৭ লাখ টন তেল আমদানিতে ৫ হাজার ৩৫০ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং সৌদি আরব থেকে ৬ লাখ টন জ্বালানি তেল আমদানিতে ৪ হাজার ৪১৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
অনুমিত এফওবি মূল্য, জাহাজ ভাড়া, ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ, লাইটারেজ খরচ, ডিউটি ভ্যাটসহ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতি ব্যারেল তেলের আনুমানিক মূল্য পড়বে জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত ১২৫ দশমিক ২৯ ডলার এবং জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩০ দশমিক ২৯ ডলার।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ দু’টি দেশের সঙ্গে বিদ্যমান মেয়াদি চুক্তি নবায়নের মাধ্যমে এ তেল আমদানি করা হবে। বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যের অস্থিতিশীলতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে নিয়মিতভাবে অপরিশোধিত তেল আমদানি নিশ্চিত করতে ১৯৭৯ সাল থেকে আবুধাবীর ‘অ্যাডনক’ ও ১৯৮৩ সাল থেকে সৌদি আরবের ‘সৌদি অ্যারামকো’ থেকে বার্ষিক ‘টার্ম চুক্তি’র আওতায় তেল আমদানি করা হচ্ছে। সাধারণত এ দু’টি দেশের ‘সরকারি বিক্রয় মূল্যের (গভর্নমেন্ট সেলিং প্রাইস-জিএসপি)’ ভিত্তিতে তেল কেনা হয়।
সৌদি অ্যারামকোর সঙ্গে বিপিসির ১৯৯৪ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তিপত্রে উল্লেখ আছে যে, কোনো পক্ষ চুক্তি বাতিল না করলে বিদ্যমান চুক্তি স্বাভাবিকভাবে এক বছরের জন্য নবায়ন হবে। অপরদিকে অ্যাডনকের সঙ্গেও প্রতি পঞ্জিকাবর্ষের জন্য বিপিসি’র (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন) চুক্তি করতে হয়। ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তির মেয়াদ গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে চুক্তি নবায়নের জন্য ইতোমধ্যে অ্যাডনক বিপিসিকে চিঠি পাঠিয়েছে।
জ্বালানি বিভাগের সূত্র আরও জানিয়েছে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য স্থিতিশীল নয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে দেখা যায়, গত ২৩ নভেম্বর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য প্রতি ব্যারেল ১১১ দশমিক ০৫ মার্কিন ডলার। আগামী এক বছরে এ তেলের মূল্য ১০৯ ডলার হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এইচএসএম/আরকে/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৪)