চট্টগ্রাম অফিস : হানাহানি, মারামারি ও টেন্ডারবাজিসহ সবধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে ছাত্রলীগ নেতাদের কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসায় রবিবার এক মতবিনিময়সভা ও চা চক্রে অংশ নিয়ে নগর ছাত্রলীগ ও চবি ছাত্রলীগ নেতাদের হুঁশিয়ারি করে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজেরা সংশোধন না হলে সাংগঠনিক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো। ছাত্রলীগের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও সুনাম ম্লান হচ্ছে।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রণি এবং চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজনকে সম্প্রতি সময়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন বিতর্কিত ও সমালোচিত কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন ওবায়দুল কাদের।

এ সময় ওবায়দুল কাদের নগর ছাত্রলীগ নেতাদের প্রশ্ন করেন, চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজে এতো মারামারি কর কেন? সব সময় পত্রিকায় খবর আসে তোমরা নিজেরা মারামারি করো। এসব বন্ধ কর।’

উত্তরে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমতিয়াজ ইমু বলেন, ‘এ দুটি কলেজ জামায়াত শিবিরের দখলে ছিল। অনেকদিন পর আমরা উদ্ধার করেছি। দুটি কলেজে নতুন ইউনিট হয়েছে। তাই আমাদের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, এখন ঠিক হয়ে গেছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। তাই বলে তোমরা মারামারি করবে কেন? আমাদের মুরব্বি মহিউদ্দিন ভাই আছেন এখানে, তোমরা ওনার সঙ্গে পরামর্শ করবা। উনি সব ঠিক করে দেবেন। তোমাদের কারণে নেতাদের দোষ হয়।’

তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘এসব বন্ধ কর। আমরা আর এসব সহ্য করবো না। নেত্রী নির্দেশ আছে কোন ধরনের সন্ত্রাস মারামারি প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। সামনে নির্বাচন। দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। নেত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন ছাত্রলীগটাকে দেখতে। সেজন্য আমরা ছাত্রলীগ ডিল করতে শুরু করেছি।’

এসময় ওবায়দুল কাদের মহিউদ্দিন চৌধুরীর পুত্র ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের দায়িত্ব এবং তদারকির নির্দেশ দেন।

বৈঠকে উপস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর উদ্দেশ্যে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কয়েকদিন পরপর আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারি হানাহানি হয় কেন। এটা কেন কন্ট্রোল করতে পারেন না? আপনি ভিসি, আপনি নিরপেক্ষ থাকবেন। এতোটা দলীয় হওয়ার দরকার নেই। ছাত্রলীগের কথা আপনি শুনবেন কেন, ছাত্রলীগ কি আপনাকে ভিসি বানিয়েছে?’

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেন্ডারবাজি বন্ধ করে ই-টেন্ডার চালুর নির্দেশ দেন।

এছাড়াও ওবায়দুল কাদের চট্টগ্রাম মহানগর, কলেজসমূহ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের খোঁজখবর নেন এবং বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) নূর ই আলম চৌধুরী মিনা।

(দ্য রিপোর্ট/এস/এপি/ডিসেম্বর ২৫, ২০১৬)