চট্টগ্রামে শেষ হলো আঞ্চলিক ইজতেমা
চট্টগ্রাম অফিস : মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করে আখেরী মুনাজাতের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে শেষ হলো তিন দিন ব্যাপী ইজতেমা। বিশ্ব ইজতেমার আঞ্চলিক আয়োজন ছিল এটি। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) শেষ দিনে দলমত ও বয়স নির্বিশেষে সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানের সমাগম ঘটেছিল ইজতেমা ময়দানে।
এদিন আখেরী মুনাজাতে অংশ নিতে ভোর থেকে হাটহাজারী চারিয়া ইউনিয়নের ইজতেমায় দলে দলে মুসল্লিদের ছুটে যেতে দেখা যায় । এ কারণে সকাল থেকে হাটহাজারী সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ভোর থেকে বিভিন্ন ইসলামী চিন্তাবিধদের বয়ান শুরু হয়। তাবলীগের ছয় উসুল সম্পর্কে বয়ানে বক্তারা বলেন, প্রতিটি মুসলমানের উচিত দ্বীনের মেহনত ও খেদমত করা। দ্বীনের জন্য মেহনত চালু হয়ে গেলেই দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি আসবে। যারা দ্বীনের মেহনতের জন্য তাবলীগের কাজে নিয়োজিত হবে, আল্লাহ পরকালে তাদেরকেও শান্তির পুরস্কার দিবেন।’
বয়ান শেষে বেলা ১২টা ১৭ মিনিটে আখেরী মুনাজাত শুরু হয়। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে চলে মোনাজাত। লাখ লাখ মুসল্লির মাঝে আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশের দাওয়াতে তাবলীগ প্রধান ও ঢাকা কাকরাইল মসজিদের খতিব আল্লামা জুবায়ের আহমেদ।
মোনাজাত শেষে লাখো মুসল্লি তাদের নিজস্ব গন্তব্যে যেতে যানবাহন সঙ্কটে পড়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হন। এক সাথে সকলে বাড়ি ফিরতে শুরু করলে এক পর্যায়ে ময়দানের চারিদিকে মানব জটের সৃষ্টি হয়। জনস্রোতের কারণে কোনো যানবাহন চলাচল করতে না পারায় কয়েক কিলোমিটার হেঁটে যানবাহন ধরতে হয়েছে সকলকে।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এ বছর প্রথমবারের মতো শুরু হয় (২৯ ডিসেম্বর) ৩ দিনের বিশ্ব ইজতেমার আঞ্চলিক এ ধর্মীয় সমাবেশ। শুক্রবার জুমার নামাজে ১০-১২ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটলেও শনিবার সমাপনী দিনে অন্তত ১৪-১৫ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নিয়েছে বলে ধারণা করছেন আয়োজকরা।
এ ছাড়া ইজতেমায় দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ছাড়াও ভারত, চীন, কাতার, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, জর্ডান, মিশর, কুয়েত ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশের শতাধিক বিদেশি মেহমানও ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ব ইজতেমা কমিটির সদস্যরা।
কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ইজতেমা শেষ হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বলেছেন, তিন দিনের ইজতেমায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আঞ্চলিক ইজতেমা উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ট্রাফিক, গোয়েন্দা ও সাদা পোশাকে ১৪০০ পুলিশ মোতায়েন ছিল তিন দিন ধরে।
(দ্য রিপোর্ট/একেএ/জেডটি/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬)