দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) মাস্টার প্ল্যান (মহাপরিকল্পনা) না মেনে জমি ব্যবহারের জরিমানা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা হচ্ছে।

এজন্য ‘চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৬’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সচিবালয়ে সোমবার (২ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ১৯৫৯ সালের। আমাদের নতুন আরও কয়েকটি কর্তৃপক্ষ হয়েছে। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এগুলো একটু মডার্ন (আধুনিক) আইন। ওই আইনগুলোর সামঞ্জস্য রেখে এ আইনটাকে (চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন) আপডেট করা হয়েছে।’

নতুন আইনে জেল ও জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাস্টার প্ল্যানের জমি যদি কেউ বিধি-বিধান অনুসরণ না করে ব্যবহার করে তবে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে। এক্ষেত্রে আগে প্রথমদিনের জন্য সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা এরপর প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা হারে জরিমানার বিধান ছিল।’

শফিউল আলম বলেন, ‘(কর্তৃপক্ষের) চেয়ারম্যান, সদস্য বা কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃপক্ষের কোন পদে বহাল থাকাকালীন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ব্যবসা করলে শাস্তি হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড। আগের আইনে এক্ষেত্রে বলা ছিল দণ্ডবিধির ১৬৮ অনুযায়ী শাস্তি হবে।’

রাস্তা থেকে সীমানা প্রাচীর, খুঁটি, বাতি ইত্যাদি অপসারণে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা, আগের জরিমানা ২০০ টাকা ছিল বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘যে সব স্থাপনার (সরানোর) জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে সেগুলো অপসারণে কোন মালিকের অপারগতার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি পাকা দালানের ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা ও পাকা দালান নয় এমন ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা।’

ইনস্টিটিউট প্রধানের পদ মহাপরিচালকে উন্নীত হচ্ছে

‘হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৬’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘নতুন আইনটি মূলত ১৯৭৭ সালের যে অর্ডিন্যান্স সেটাকে রিপ্লেস করার জন্য। মন্ত্রিসভা ও সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত হল যে আইনগুলো সামরিক শাসনামলে হয়েছে সে আইনগুলো রিপ্লেস করতে হবে। সেই বাধ্যবাধকতায় এ আইনটি আনা হয়েছে।’

‘(নতুন আইনে) তেমন কোন বড় পরিবর্তন করা হয়নি। ইংরেজি আইনটি বাংলা করা হয়েছে।’

হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট মিরপুরে অবস্থিত জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান প্রধানের বর্তমান পদবি পরিচালক। নতুন আইনে এটাকে আপগ্রেড করে মহাপরিচালক নাম দেওয়া প্রস্তাব করা হয়েছে।’

গবেষণাই এ প্রতিষ্ঠানটির মূল কাজ বলেও জানান তিনি।

পরিচালনা পরিষদটি বাড়িয়ে-কমিয়ে সুবিন্যস্ত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী হবে এ পরিষদের চেয়ারম্যান। এ কমিটির মোট সদস্য সংখ্যা ২০ জন। মনোনীত সদস্যরা ২ বছরের জন্য কাজ করবেন। এ কমিটি বছরে কমপক্ষে বছরে ২ বার সভা করবে।’

এছাড়া দৈনন্দিন কার্যক্রম চালিয়ে নিতে নতুন আইন অনুযায়ী মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একটি নির্বাহী কমিটিও থাকবে বলেও জানান তিনি।

ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন অনুমোদন

‘বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন, ২০১৬’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

শফিউল আলম বলেন, ‘এটি ১৯৮২ সালের একটি অর্ডিন্যান্স ছিল। সামরিক শাসনামলের আইন হওয়ায় ও বাংলায় করার বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী এটি আনা হয়েছে। এখন মূলত ইংরেজি আইনটি বাংলায় করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল কার্যকর আছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটি এ পর্যন্ত ৫ হাজার ১৫০ জন ভেটেরিনারি সার্জেন্ট গ্রাজুয়েটকে রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে।’

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এস/জানুয়ারি ০২, ২০১৭)