দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নির্বাচন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মিডিয়া সেন্টারে বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন।

তিনি বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করেছেন। এই নির্বাচন নিয়ে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও সার্বিক নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচন দলীয় নয়। তবে গত তৃতীয় দফা উপজেলা নির্বাচনের মত এটা দলীয় মাত্রা পেয়েছে। সেখানে কিছু রাজনৈতিক দলের সমর্থিত প্রার্থী ও নির্দলীয় ব্যক্তি অংশ নিয়েছে। রাজনৈতিক দলের অভিযোগ আমাদের কাছে গুরুত্ব বহন করে না। তবে প্রার্থীরা অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকে।

কত ভাগ ভোট পড়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনোই বলা সম্ভব নয়। পূর্ণাঙ্গ ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না। আমরা অনুমানের ওপর কিছু বলতে পারি না।

এর আগে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম ভোট কারচুপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ইসির কাছে ভোট কারচুপি বা কেন্দ্র দখলের কোনো তথ্য নেই। বিএনপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, এটি একটি নির্দলীয় নির্বাচন। আমরা প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবেই কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি। আর তারাও সেভাবেই কাজ করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে। কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিচ্ছিন্ন দু’একটি ঘটনা ছাড়া সবখানেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে। ঝিনাইদহের শৈলকুপার মধুপুরা কেন্দ্র ও নবাবগঞ্জের ৮১ দড়িকান্দি স্কুলের ভোটগ্রহণ অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

কারচুপির বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাপক’ ভোট কারচুপির বিষয়টি সঠিক নয়। এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।

এদিকে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জাল ভোট ও কেন্দ্র দখলের সুনির্দিষ্ট ১২ পৃষ্ঠার অভিযোগ লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে বিএনপি। বুধবার ফ্যাক্সযোগে বিএনপির পক্ষ থেকে যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এ অভিযোগপত্র পাঠানো হয়।

রুহুল কবির রিজভী নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, ভোট কারচুপি ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেন।

তথ্যভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেওয়া হলেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি ইসি, অভিযোগ করেন রিজভী। দেশের ৯৭টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ বিকেল ৪টায় শেষ হয়।

ছয়টি উপজেলায় বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরা জাল ভোট, ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছেন। এ ছাড়া ভোলার লালমোহন, ঝিনাইদহের শৈলকুপা, পাবনার সুজানগর, বরিশালের গৌরনদী, বাকেরগঞ্জ, শরিয়তপুরের গোসাইরহাট, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেন।

গতবার জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে ২০ শতাংশ কম ভোট পড়েছিল উপজেলায়। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নবম সংসদে ভোট পড়ে ৮৭ শতাংশ। এটিএম শামসুল হুদার অধীনে তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৬৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল।

কাজী রকিবউদ্দীনের অধীনে দশম সংসদ নির্বাচনে ভোট পড়ে ৪০ শতাংশ।

(দ্য রিপোর্ট/এমএস/এমএআর/সা/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৪)