চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রাম বন্দর ও বহির্নোঙ্গরে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজগুলো উদ্ধারের জন্য দেশে প্রথমবারের মতো ‘এএসএল আম্বির’ নামে একটি ইমার্জেন্সি রেসপন্স ভ্যাসেল আনা হয়েছে। জাহাজটি বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, পঞ্চাশ হাজার টন ওজনের যে কোন জাহাজকে হ্যান্ডলিং করতে সক্ষম জাহাজটি বেসরকারি উদ্যোগে আনা হয়েছে। মালয়েশিয়া থেকে ভারতের চেন্নাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের বিস্তৃত এলাকার মধ্যে এই ধরনের শক্তিসম্পন্ন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আর কোন উদ্ধার ভ্যাসেল নেই।

জানা যায়, মাস দুয়েক আগে কয়েক হাজার কোটি টাকার আমদানি পণ্য বোঝাই কন্টেনারসহ একটি জাহাজ নষ্ট হয়ে যায় চট্টগ্রাম বন্দরে। জাহাজটি বন্দরের বহির্নোঙ্গরে রেখে মেরামতের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে কোন কাজ না হওয়ায় একপর্যায়ে জাহাজটি মেরামতের জন্য সিঙ্গাপুর থেকে একটি টাগ আনা হয়। ওই টাগ দিয়ে অচল জাহাজটিকে টেনে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়। সিঙ্গাপুরে নিয়ে জাহাজটিতে থাকা কন্টেনারগুলো খালাস করে জাহাজটি মেরামত করা হয়। পরবর্তীতে ওই জাহাজটিতে আবারো কন্টেইনারগুলো বোঝাই করে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসা হয়। এতে আমদানিকারকদের দীর্ঘ সময় নষ্ট হয়। ফলে কাঁচামালের অভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে কয়েকটি কারখানা। আমদানিকারকেরা সময়মতো কন্টেনার খালাস করতে না পেরে কোটি কোটি টাকা গচ্ছার কবলে পড়েন। অথচ একটি উদ্ধারকারী জাহাজ থাকলে এই জাহাজটিকে টেনে বন্দরের অভ্যন্তরে জেটিতে নিয়ে আসা কোন কঠিন কাজ ছিল না।

এই অবস্থার অবসানে প্রান্তিক মেরিন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর থেকে একটি ইমার্জেন্সি রেসপন্স ভ্যাসেল চার্টার্ড করে এনেছে। জাহাজটি চট্টগ্রামে অবস্থান করবে এবং এখানকার প্রয়োজন মেটাবে। পঞ্চাশ হাজার টনের জাহাজ হ্যান্ডলিং ছাড়াও ‘এএসএল আম্বির’ নামের ভ্যাসেলটি অচল জাহাজকে টেনে নিয়ে যাওয়া, অগ্নিকাণ্ডের সময় ফায়ার ফাইটিং, অয়েল রিগ হ্যান্ডলিং করাসহ বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম সমাধা করতে পারবে। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে এই ইমার্জেন্সি রেসপন্স ভ্যাসেলটিতে।

প্রান্তিক মেরিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সারোয়ার হোসেন বলেন, এই ধরনের একটি জাহাজ আমাদের এই অঞ্চলে থাকা খুবই জরুরী। আমরা বহুদিন ধরে এমন একটি জাহাজের অভাব বোধ করছিলাম। আমাদের বন্দরের কাণ্ডারি-১১ নামের একটি টাগ আছে। ওটিও শক্তিশালী। তবে এটির সাথে কাণ্ডারির পার্থক্য আকাশ পাতাল। ‘এএসএল আম্বির’ ভ্যাসেলটি দিয়ে যেসব উদ্ধার কার্যক্রম চালানো যাবে তা কাণ্ডারি বা এই ধরনের সাধারণ টাগ দিয়ে চালানো সম্ভব হয় না। এই ইমার্জেন্সি রেসপন্স ভ্যাসেলটি দিয়ে অনেক বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এনআই/জানুয়ারি ০৫, ২০১৭)