দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র (পেসক্রিপশন) পড়ার উপযোগী বা বড় হাতের অক্ষরে বা ছাপা অক্ষরে লেখার বিষয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সার্কুলার জারির জন্য নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতর মহাপরিচালক, বিএমডিসির রেজিস্ট্রারকে এই সার্কুলার জারির বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এছাড়া প্রেসক্রিপশন পড়ার যোগ্য অক্ষর অথবা বড় হাতের অক্ষর অথবা ছাপা অক্ষর এই তিনটির যে কোনো একটি পদ্ধতিতে দেওয়ার বিষয়ে এবং ওষুধের নাম জেনারিক টার্মে (প্রকৃত নাম) লেখার বিষয়ে সরকারকে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করা হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বিএমডিসির রেজিস্ট্রার, বিএমএর মহাসচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

গত ১৭ ডিসেম্বর ‘দুর্বোধ্য ব্যবস্থাপত্র : ভুল ওষুধ গ্রহণের ঝুঁকিতে রোগীরা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ২ জানুয়ারি হাইকোর্টে একটি রিট করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই আদালত আজ (সো্মবার)এই আদেশ দেন।

পত্রিকার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রের দুর্বোধ্যতার কারণে প্রতিনিয়তই বিপাকে পড়ছেন অনেকে। অনেক সময় ওষুধের দোকানিরাও ব্যবস্থাপত্রের লেখা পড়তে ব্যর্থ হন। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন দরিদ্র ও অশিক্ষিত রোগী ও তাদের স্বজনরা। বিভিন্ন ওষুধের দোকানে কর্মরতদের ওপর অনেকটা অন্ধভাবেই আস্থা রাখতে হয় সাধারণ মানুষকে। এতে রোগীদের ভুল ওষুধ গ্রহণের ঝুঁকি বাড়ছে ভয়াবহভাবে।

শুধু তাই নয়, লেখা পড়তে ব্যর্থ হওয়ায় ফার্মেসি থেকে প্রায়ই ভুল ওষুধ গছিয়ে দেয়া হচ্ছে। বর্তমানেদেশে প্রায় ৩০ হাজার ওষুধের ব্র্যান্ড রয়েছে। এসব ওষুধের নাম মনে রাখা সংশ্লিষ্টদের পক্ষে অনেক কঠিন। এর সঙ্গে দুর্বোধ্য ব্যবস্থাপত্রের সংযুক্তি সঠিক চিকিৎসাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চিকিৎসকদের দুর্বোধ্য লেখার কারণে ভুল ওষুধ গ্রহণের মাত্রা বাড়ছে। ফলে শরীরে বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। আর কাঙ্ক্ষিত ওষুধ না পেয়ে রোগী ও তার স্বজনদের ভোগান্তি তো রয়েছেই। এজন্য বড় (ক্যাপিটাল লেটার) ছাপার অক্ষরে ব্যবস্থাপত্র লেখার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। এতে রোগী, স্বজন ও দোকানিদের পক্ষেও ব্যবস্থাপত্র বোঝা সহজ হবে, যা চিকিৎসা বিড়ম্বনা কমাবে অনেকাংশে। সম্প্রতি ভারতে দেশটির উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্রে বড় ছাপার অক্ষরে লেখা চালু হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/এমকে/এনআই/জানুয়ারি ০৯, ২০১৭)