অনুবাদ গ্রন্থের আকাল
গ্রন্থমেলায় এ পর্যন্ত নতুন বই ১৭৩১টি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বুধবার পর্যন্ত নতুন বই এসেছে ১৭৩১টি। এগেুলোর মধ্যে গল্প ২৩৭টি, উপন্যাস ৩২৪টি, প্রবন্ধ ১২০টি, কবিতা ৪২০টি, গবেষণা ২৯টি, ছড়া ৪৫টি, শিশুতোষ ৫৫টি, জীবনী ৫১টি, রচনাবলী ৭টি, মুক্তিযুদ্ধ ২৯টি, নাটক ২১টি, বিজ্ঞান ২২টি, ভ্রমণ ৩৯টি, ইতিহাস ২৬টি, রাজনীতি ১২টি, চিকিৎসা ৮টি, কম্পিউটার ৭টি, রম্য ৪৭টি, ধর্মীয় ৩০টি, অনুবাদ ১৪টি, অভিধান ২টি এবং অন্যান্য ১৬০টি।
একাডেমি ও প্রকাশকদের সূত্র মতে, অনুবাদের বই প্রকাশ হয় একেবারে কম। অথচ রাস্তায় পাইরেটেড বইয়ের দোকানে খোঁজ নিলে দেখা যায় অন্যান্য বইয়ের তুলনায় তারা অনুবাদের বই বিক্রি করছে বেশি। এগুলোর মধ্যে অধিক বিক্রির তালিকায় রয়েছে নেলসন ম্যান্ডেলার ‘লং ওয়াক টু ফ্রিডম,’ মনিকা আলীর ‘ব্রিকলেন’, হিটলারের ‘মেইন ক্যাম্প,’ বারাক ওবামার ‘মাই ফাদার’স ড্রিম।’ এ ছাড়াও এপিজে আবুল কালাম আজাদ, টনি ব্লেয়ারের আত্মজীবনী ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে।
পুরো মেলা ঘুরে দেখা গেছে প্রতিবারের মতোই মাওলা, আগামী, চারুলিপি, অনিন্দ্য, অ্যাডর্ন, ইউপিএল, কাকলী, আফসার ব্রাদারস, চন্দ্রমুখী প্রভৃতি প্রকাশনা সংস্থা পৃথক পৃথকভাবে এক বা একাধিক অনুবাদগ্রন্থ প্রকাশ করেছে। এগুলোর মধ্যে নিজ দেশের গ্রন্থকে ভিনদেশী পাঠকের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায় না। হাতেগোনা যে কয়টা অনুবাদগ্রন্থ এসেছে সেগুলো ভিনদেশী ভাষার সাহিত্যকে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অ্যাডর্ন প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সৈয়দ জাকির হোসাইনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘বই বিক্রেতা আর প্রকাশক হওয়া এক বিষয় নয়। যাদের সাহিত্যের প্রতি দায় নেই তাদের তো অনুবাদ, অভিধান বা গবেষণার প্রতি আগ্রহ দেখাবার কথা নয়? আমি ব্যক্তিগতভাবে একজন প্রকাশকের দায় মনে করে এবারের গ্রন্থমেলায় বিভিন্ন ভাষার ৬টি অনুবাদের গ্রন্থ আনার চেষ্টা করেছি। প্রত্যাশা রাখি এর সংখ্যা আগামীবারআরও বাড়বে।’
দীর্ঘদিন ধরে অনুবাদ চর্চার সঙ্গে সম্পৃক্ত কবি আসাদ চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘ভিনদেশী সাহিত্যের চাহিদা মেটানোর জন্য একমাত্র বৈধ উপায় হলো তার অনুবাদ করা। আমাদের দেশে এরকম কাজ খুব একটা হচ্ছে না। অথচ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘুরে দেখেছি আমাদের দেশের সাহিত্যের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ বিশেষ করে- যুক্তরাজ্য ও আমেরিকায়। স্বদেশী ও বিদেশী পাঠকের চাহিদা পূরণ করার কাজটি প্রকাশকদের পাশাপাশি অনুবাদকদেরও করতে হবে।’
অনুবাদের বই কিনতে এসে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফেরার পথে যাত্রাবাড়ী নিবাসী ইমদাদ হোসেন নামের এক পাঠক অনেকটা রাগান্বিত স্বরে দ্য রিপোর্টকে বলেন- ‘মেলাকে আন্তর্জাতিকতায় পৌঁছাতে হলে অনুবাদ বইয়ের বিকল্প নেই। অথচ বাংলা একাডেমি কিংবা প্রকাশকদের তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যায় না।’
(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এপি/এনআই/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৪)