যশোর অফিস : যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) এইচএম মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে মাদারীপুরের একটি আদালত। তার স্ত্রী রেজোয়ানা রহমানের যৌতুক নিরোধ আইনে দায়ের করা মামলায় বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) আদালত এই পরোয়ানা জারি করেন।

এসআই মাহমুদ মাদারীপুর শহরের আব্দুল হক হাওলাদারের ছেলে।

মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা ওই অভিযোগে রেজোয়ানা রহমান উল্লেখ করেন, ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর এইচএম মাহমুদের সাথে তার বিয়ে হয়। মাহমুদের সাথে বিয়ের আগে তার অন্য একজনের সাথে বিয়ে হয়েছিল। সেখানে তালাক হওয়ার পর মাহমুদের সাথে বিয়ে হয়। সে কারণে বিয়ের সময় তার পিতা যৌতুকের দাবি অনুযায়ী নগদ দুই লাখ টাকা, পাঁচ ভরি ওজনের সোনার অলংকার এবং বেশ কিছু মূল্যবান আসাবাবপত্র দেন। সংসার জীবনে তাদের রাফাজ নামে দেড় মাস বয়সের একটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিয়ের পর রোজোয়ানা জানতে পারেন মাহমুদ মদ-গাঁজা সেবন করেন ও জুয়া খেলেন। এছাড়া বিভিন্ন আজেবাজে মেয়েদের সাথে মাহমুদের সম্পর্ক রয়েছে। এতে মাহমুদকে বাঁধা দিতে গেলে তাকে নানা ধরনের নির্যাতন করেন। বিয়ের সময় যে টাকা দেওয়া হয়েছিল মাহমুদ তা শেষ করে ফেলেন। পরে তার দুইভাই মাসুম হাওলাদার ও মামুন হাওলাদার, মা মনোয়ারা বেগম এবং মাসুম হাওলাদারের স্ত্রী আসমা আক্তারের প্ররোচণায় মাহমুদ তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় তাকে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। গত ৩১ ডিসেম্বর সকালে মাহমুদ তার পরিবারের সদস্যদের পরমর্শে যৌতুকের টাকার জন্য তাকে মারপিট করে শিশু সন্তানসহ তার পিতার বাড়িতে তাড়িয়ে দেন।

এ ঘটনার পর ওই দিন রোজোয়ানা আদালতে মামলা করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে এসআই এইচএম মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে তা মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে যশোর কোতোয়ালি থানায় কর্মরত এসআই এইচএম মাহমুদ জানান, তার সাথে বিয়ের আগে রেজোয়ানার ৩-৪টি বিয়ে হয়েছিল। সব জেনে তার সাথে প্রেম করে বিয়ে হয়। তার ধারণা ছিল বিয়ে পর সে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু বিয়ের পর তার স্বভাব-চরিত্র বদলায়নি। রোজোয়ানা শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে থাকতে চান না। বাধ্য হয়ে ৩১ ডিসেম্বর তাকে তালাক দিয়েছেন। তাকে কোন নির্যাতন বা মারপিট করা হয়নি। তালাক দেওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন। মামলার বিষয়টি মাহমুদ ১১ জানুয়ারি জানতে পেরেছেন। তবে এখনো কোর্টের আদেশ পাননি।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপি/এনআই/জানুয়ারি ১২, ২০১৭)